খেলাধূলা ডেস্ক
এটি ছিল অঘোষিত ফাইনাল। যে দল জিতবে, তারা টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি হাতে তুলবে। এমন এক ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ১৯৪ রানের কঠিন এক লক্ষ্য। আর শেষ ওভারের আগ পর্যন্ত শঙ্কা কাটেনি।
সৌম্য সরকারের ব্যাটে জয় দেখছিল বাংলাদেশ। তবে মাঝে টানা উইকেট পতনের পর ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়।
কিন্তু শেষদিকে মাত্র দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামা তরুণ শামীম হোসেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় টাইগাররা। সেই সঙ্গে টেস্ট ও ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নিল বাংলাদেশ।
রোববার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৪ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয়।
টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের ধবলধোলাই করার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাহমুদউল্লাহবাহিনীর জয় এলো ২-১ ব্যবধানে।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দলীয় ২০ রানের মাথায় ওপেনার নাঈম শেখ সাজঘরে বিদায় নেন ৩ রান করে। বেশিক্ষণ খেলেতে পারেননি সাকিবও। ১৪ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২৫ রান তিনিও সাজঘরের দিকে হাঁটেন। তবে বিদায়ের আগে সৌম্যর সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৩২ বলে ৫০ রান। এরপর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে লড়াই শুরু সৌম্য সরকারের।
শুরুটা ধীরগতির হলেও সময়ের সঙ্গে হাত খুলে খেলতে থাকেন সৌম্য। ৪০ বলে তুলে নেন ফিফটিও। এরপর দ্রুতগতিতে রান তুলতে গিয়ে লুক জঙওয়ের বলে লং অফে থাকা বদলি খেলোয়াড় মুসাকান্দার হাতে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। তবে বিদায়ের আগে তিনি ৪৯ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ৬৮ রানের দারুণ এক ইনিংস। রিয়াদের সঙ্গে গড়েন ৩৫ বলে ৬৩ রানের জুটি।
বাংলাদেশের ইনিংসের ১৫তম ওভারে আসে মাত্র ২ রান। মুজারাবনির করা ওভারের প্রথম দুই বলে সিঙ্গেল আসার পর ওই আর কোনো রান নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। পরের ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন। দুই ছক্কায় ৪ বলে ১৪ রান করেন এই বাঁহাতি।
আফিফের পর ক্রিজে নামা শামীম হোসেনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। দুজনে মিলে ১৭তম ওভারে ১২ রান তোলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন দুজনে। শেষ ১৮ বলে দরকার ছিল ২৮ রান। ১৮তম ওভারে রিয়াদ সিঙ্গেল নেওয়ার পর শেষ তিন বলে তিন চার হাঁকান শামীম। ওভারে আসে ১৫ রান। ফলে শেষ দুই ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ রান।
মুজারাবানির করা ইনিংসের ১৯তম ওভারেও শামীম ঝলকের দেখা মেলে। তরুণ এই ব্যাটসম্যান ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু চতুর্থ বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। টাইগার দলপতি ২৮ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রান করেন।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫ রান। শামীম প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে স্কোরে সমতা টানেন। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। শামীম মাত্র ১৫ বলে ৬ চারে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে হারারেতে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের সামনে পাহাড়সম লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিকরা। ওপেনার ওয়েসলে মাধেভেরের ৫৪, রেগিস চাকাভার ৪৮, তিদওয়ানশে মারুমানির ২৭, ডিওন মায়ার্সের ২৩ ও শেষদিকে রায়ান বার্লের অপরাজিত ৩১ রানে ভর করে ১৯৩ রান তুলেছে দলটি। যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২ উইকেট নিয়েছেন সৌম্য সরকার। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন, শরীফুল ও সাকিব।ম্যাচ ও সিরিজ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন সৌম্য সরকার।
Discussion about this post