খেলাধূলা ডেস্ক
আজ সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালোভাবেই উৎরালো মাহমুদউল্লাহর বাহিনী। নাঈম-মুশফিকদের ব্যাটে ভর করে শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লাল-সবুজের জার্সিধারীদের সংগ্রহ ১৭১ রান। অর্থাৎ লঙ্কানদের জিততে হলে আজকে করতে হবে ১৭২ রান।
এর আগে প্রথম ওভারে মাত্র ২ রানে ইনিংস শুরুর পর দ্বিতীয় ওভারে বিনুরা ফার্নান্ডোর লেগস্টাম্পের বাইরের বলে ফ্লিক করতে ভুল করেননি লিটন দাস। দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছে প্রথম বাউন্ডারি। এরপর তৃতীয় ওভারে ১২ রান সংগ্রহ করেছে দুই উদ্বোধনী ব্যাটার। টানা দুটি ফ্রন্টফুটের নো-বল করেছেন দুষ্মন্ত চামিরা। দুটি ফ্রি-হিটই ব্লকহোলে করার চেষ্টা করেছেন। প্রথমটিতে নাঈমের তেমন টাইমিং হয়নি, হয়েছে ২ রান। পরেরটিতে অবশ্য চার মেরেছেন নাঈম।
ওমানের বিপক্ষে দারুণ খেলা নাঈম শেখের হাত ধরেই এদিন বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি পৌঁছে যায় ২৯ রানে। সর্বশেষ ৭ ম্যাচে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান আসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে উঠেছিল ৫৯ রান। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে উঠেছিল ৮, ১১ ও ০ রান।
তবে ভালো শুরুর পর ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে চামিরার বলে কাটা পড়েন লিটন দাস। লাহিরু কুমারার বলে দাসুন শানাকার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ১৬ বলে ১৬ রান। দলীয় ৪০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পড়লে মাহমুদউল্লাহ বাহিনীর।
ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়ার আগে লিটন বিতণ্ডায় জড়ান বোলার লাহিরু কুমারার সঙ্গে। যদিও লিটনকে আউট করার পর কুমারাকেই শুরুতে এগিয়ে গিয়ে কিছু একটা বলতে দেখা গেছে। লিটন শুধু সেটির জবাব দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার অন্য খেলোয়াড়, নাঈম ও আম্পায়াররা এসে শান্ত করেছেন দুজনকে। নিশ্চিতভাবেই ম্যাচ রেফারির খাতায় উঠেছে দুজনের নাম।
অন্যদিকে, লিটনের পর ব্যাট করতে নেমে থিতু হওয়ার আগেই ফিরলেন গ্রুপপর্বের দুই জয়ের নায়ক সাকিব আল হাসান। চামিকা করুনারত্নে পেয়েছেন বাংলাদেশ ইনিংসের সবচেয়ে বড় উইকেটটা। ৭ বলে দুই চারের সাহায্যে ১০ রান করে আউট হয়ে গেছেন সাকিব। বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় ৫৬ রানে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে এ পর্যন্ত তিনটি ফিফটি বাংলাদেশের। এর মধ্যে দুটির পাশেই লেখা আছে একজনের নাম। নাঈম শেখ। প্রথমটি ছিল গ্রুপপর্বের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে। আর সবশেষটি সুপার টুয়েলভের প্রথম লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
অথচ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে তাকে বাদ দিয়েই একাদশ সাজানো হয়েছিল। তবে সৌম্য খারাপ খেলায় দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েই কাজে লাগিয়েছিলেন। অন্যদিকে, সাকিব ফেরার পর নাঈমের সঙ্গে জুটি বেধে দারুণ শুরু পান বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে অন্যতম ভরসা মুশফিকুর রহিম। এর আগে গত কয়েক ইনিংসে তিনি রান পাচ্ছিলেন না। আজ যেন সেগুলো শোধ করার মিশনেই নেমেছেন মুশি।
দুই উইকেট হারিয়ে ফেললেও এই দুই ব্যাটসম্যান মিলে রানের চাকা ঠিকই সচল রাখছিলেন। তবে বিনুরা ফার্নান্ডোর স্লো বাউন্সারে থামল নাঈমের ব্যাট। ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৫২ বলে ৬২ রান করেছেন। উল্লেখ্য, ওমানের বিপক্ষে করেছিলেন ৬৪।
নাঈমের পর আফিফ ফিরলেও সেটি প্রভাব পড়েনি খুব একটা। মুশফিকের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের বড় টার্গেটই দিল টাইগাররা। ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন মুশি। রান করেছেন ৩৭ বলে ৫৭।
অন্যদিকে, বল হাতে এদিন শ্রীলঙ্কার তুরুপের তাস ছিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তবে ব্যর্থই ছিলেন তিনি। ৩ ওভারে ২৯ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি তিনি। তবে তার সতীর্থ লাহিরু কুমারা, বিনুরা ফার্নান্ডোরা এক উইকেট করে শিকার করেছেন।
Discussion about this post