খেলাধূলা ডেস্ক
বিশ্বকাপের হতাশা ভুলে খেলতে নামা বাংলাদেশ আশা জাগিয়েও পাকিস্তানের শেষের ব্যাটারদের দাপটে হেরে গেল। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৪ উইকেটের পরাজয় বরণ করেছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
দাপুটে বোলিংয়ে শুরু থেকেই পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে রেখেছিল বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লে-তেই তুলে নিয়েছিল পাক টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটসম্যানকে। এরপর আরও ২ উইকেট তুলে নিয়ে এবং রানরেটকে প্রায় ১০-এর কাছাকাছি নিয়ে গিয়ে জয়টা নাগালেই নিয়ে এসেছিল টাইগাররা।
কিন্তু শেষদিকে এসে খেই হারিয়েছেন বোলাররা। একের পর এক শর্ট বল আর আলগা ডেলিভারিতে শাদাব আর নওয়াজকে দিলেন হাত খুলে খেলার সুযোগ। খারাপ বলের উপযুক্ত ব্যবহার করে বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারির মেলা বসান পাকিস্তানের শেষ স্বীকৃত জুটি। আর এভাবেই হাত ফসকে বেরিয়ে যায় ‘খুব সম্ভব’ থাকা জয়টা।
শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। মুস্তাফিজ আর শরীফুলের ২ ওভারেই ৩০ রান তুলে নিলেন শাদাব আর নেওয়াজ। পাক ব্যাটসম্যানরা তুলে নিয়েছেন না বলে বলা যায় মুস্তাফিজরা দিয়ে দিয়েছেন এই রান। যেন যত বাজে বল আছে তা তারা রেখে দিয়েছিলেন শেষের জন্য, যাতে পাকিস্তান ম্যাচটা সহজে জিততে পারে! শেষ ওভারে দরকার ছিল মোটে ২ রান। গোটা ইনিংসে বলা না করা আমিনুল বিপ্লবকে তখন বোলিংয়ে আনলেন অধিনায়ক! সহজেই জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারল পাকিস্তান আর হারের বৃত্তে পড়ে থাকল বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) মিরপুর শের বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ও ৪ বল বাকি থাকতে ১৩২ করে জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান। এ জয়ে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাবর আজমের দল।
১২৮ রানের লক্ষ্যে নামা পাকিস্তানের শুরুটা নড়বড়ে করে দেন মোস্তাফিজ-তাসকিনরা। ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে রানের ফুলঝুরি ছোটানো পাকিস্তানি ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (১১) বিদায় করেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার।\
এরপর চতুর্থ ওভারে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বাবর আজমকে (৩) বোল্ড করে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সফরকারীদের ওপর চাপ বাড়িয়ে তিনে নামা হায়দার আলীকে (০) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন স্পিনার মেহেদী হাসান। এরপর বিশ্বকাপে দারুণ ব্যাটিং করা অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক (০) দারুণভাবে রান-আউট করেন নুরুল হাসান সোহান। পাকিস্তান ২৪ রানে হারায় ৪ উইকেট।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। এসময় ফখর জামান ও খুশদিল শাহ মিলে ৫০ বলে ৫৬ রান করেন। অবশেষে এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন তাসকিন। ৩৬ বলে ৪৩ করা ফখরকে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন। এই জুটিতে থাকা আরেক ব্যাটার খুশদিলকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ৩৫ বলে ৩৪ রান করে তিনিও নুরুলকে ক্যাচ দেন।
তবে এরপর পাকিস্তানের সপ্তম উইকেট জুটিই মূলত হারিয়ে দেয় বাংলাদেশকে। শাদাব ও নওয়াজ মিলে মাত্র ১৫ বলে ৩৬ রানের ক্যামিও ইনিংস উপহার দিয়ে দলকে জেতান। শাদাব ১০ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ২১ করে অপরাজিত থাকেন। আর ৮ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ১৮ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন নওয়াজ।
বাংলাদেশ বোলার তাসকিন সর্বোচ্চ ২টি উইকেট লাভ করেন। একটি করে উইকেট পান মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল।
পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান হাসান আলী। এছাড়া মোহাম্মদ ওয়াসিম ২টি ও একটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান।
ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন পাকিস্তান বোলার হাসান আলী।
Discussion about this post