খেলাধূলা ডেস্ক
দুই চোখ তার ছলছল। স্টেজে ডুকলেন একটা পানির বোতল হাতে। সামনে এত এত পরিচিত মুখ। তবুও যেন আগুয়েরো চাননি এমন দৃশ্য। রুমালে চোখের পানি না হয় মোছা যায়। কিন্তু ফুটবলকে বিদায় বলার বিষাদ কি ধুয়ে ফেলা যায়? আগুয়েরো জানেন, যায় না।
তিনি তাই কান্না থামাতে পারেন না যতক্ষণ কথা বলেন। একের পর এক ধন্যবাদ জানান, কিন্তু মনটাকে শান্ত করতে পারেন না। হৃদয় ভেঙেচুরে যাওয়া যন্ত্রণা কমে না যেন কিছুতেই।
আর্জেন্টিনা, ম্যানচেস্টার সিটি ও বার্সেলোনার তারকা সার্জিও আগুয়েরো সব ধরনের ফুটবলকে বিদায় বললেন কেবল ৩৩ বছর বয়সে। বুধবার ক্যাম্প ন্যুয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অবসরের কথা জানিয়ে আগুয়েরো বলেছেন, ‘এই অনুষ্ঠানটা এই কথা জানানোর জন্য যে, আমি সব ধরনের পেশাদার ফুটবল আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা খুবই কঠিন সময়।’
কারণ জানাতে গিয়ে আগুয়েরো বলেছেন, ‘প্রথম ব্যাপার হচ্ছে আমার স্বাস্থ্য। আপনারা জানেন এক মাস আগে হার্টে সমস্যা হয়েছিল। আমি ভালো কিছু ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসা নিয়েছি। তারা আমাকে বলেছে সবচেয়ে ভালো হয় যদি খেলা বন্ধ করে দেই। আমি এক সপ্তাহ বা দশদিন আগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মাথা উঁচু করেই বিদায় নিচ্ছেন বলে মনে করেন আর্জেন্টাইন তারকা, ‘নিজের পরবর্তী জীবন নিয়ে আগুয়েরো বলেছেন, ‘আমি মাথা উঁচু করে বিদায় নিচ্ছি। আমি খুশি। আমি জানি না পরের জীবনে কী অপেক্ষা করছে আমার জন্য। কিন্তু এটা জানি, অনেক মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তারা চায় আমি যেন সেরা জায়গাতে থাকি।’
চলতি মৌসুমেই এক দশক কাটানোর পর ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়েন আগুয়েরো। যোগ দেন বার্সেলোনায়। ক্লাবটির হয়ে আলাভেজের বিপক্ষে খেলার সময়ই বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। তখন জানানো হয়, তিন মাসের জন্য ছিটকে গেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। এখন শেষ হয়ে গেল ক্যারিয়ারই।
আগুয়েরোকে সবসময়ই বিশেষভাবে স্মরণে রাখবেন ম্যানচেস্টার সিটির সমর্থকরা। ২০১১ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর এখানে ১০ বছর কাটিয়েছেন তিনি। ইত্তেহাদের দর্শকদের উপহার দিয়েছেন দারুণ সব মুহূর্ত।
ক্লাবটির হয়ে ৩৯০টি ম্যাচ খেলে ২৬০ গোল করেছেন তিনি। জিতেছেন ১৫টি শিরোপা। জাতীয় দলের হয়ে আগুয়েরো খেলেছেন ১০১ টি ম্যাচ। করেছেন ৪১ গোল। দেশটির হয়ে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন। চলতি বছর কোপা আমেরিকাজয়ী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন আগুয়েরা।
Discussion about this post