খেলাধূলা ডেস্ক
করোনাভাইরাস, কোয়ারেন্টিন, খেলা বাতিল হওয়ার শঙ্কা- এইসব ইস্যুতে অনুশীলন বাধাগ্রস্ত হয়। মাঠ ও মাঠের বাইরের এত বাধা আসলেও সব একপাশে ঠেলে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে স্বাগতিকদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে জয় ছিনিয়ে এনেছে মুমিনুল হকরা। দুর্দান্ত এই জয়ের নায়ক এবাদত হোসেন। কিউই দুর্গ জয় করে তিনি জানালেন, লক্ষ্য ঠিক করেই তারা নিউজিল্যান্ডে এসেছিলেন।
প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিউজিল্যান্ডের দখলে। তাছাড়া নিজেদের মাঠে এই ফরম্যাটে সবচেয়ে ভয়ংকর দলও তারা। পরিসংখ্যান সেটাই বলছে। দেশের মাঠে টানা ১৭ টেস্টে হারেনি কিউইরা। সেই তারাই কিনা এবাদতের পেস আক্রমণের সামনে দিশেহারা। আজ (বুধবার) ৬ উইকেট নেওয়ার দিনে বাংলাদেশি পেসার ৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন। ২০১৩ সালের পর তার হাত ধরে বাংলাদেশের কোনও পেসার পেয়েছেন ৫ উইকেট।
সেই ২০১৩ সাল। পেসার রবিউল ইসলাম সর্বশেষ ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন। এরপর সময়ের হিসাবে কেটে গেছে পাক্কা ৯ বছর। সংখ্যার হিসাবে ৪৭ টেস্ট। কিন্তু বাংলাদেশের কোনও পেসার নিতে পারেননি ৫ উইকেট। অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মাউন্ট মঙ্গানুইতে এবাদত হোসেন দ্যুতিময় বোলিংয়ে তুলে নিলেন ৫ উইকেট।
অনেক অপেক্ষা, অনেক আক্ষেপ শেষে এলো পেসারদের জন্য এমন একটি দিন। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে ও ২০১৯ সালে ইন্দোরে ৫ উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতের কারণে রাহী পাননি ৫ উইকেটের স্বাদ। পাল্লেকেলেতে তাসকিন আহমেদ ক্যারিয়ারসেরা সাফল্য পেলেও পেতে পারতেন ৬ উইকেট। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতার পেলেন চারটি। আজ সেই অপেক্ষার সমাপ্তি টানলেন এবাদত।
আগের ১০ টেস্টে এবাদতের ছিল ১১ উইকেট, গড় ৮১.৫৪! মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের প্রথম ইনিংসেও তেমন কিছু করতে পারেননি। ছন্নছাড়া বোলিংয়ে কিউই ব্যাটারদের থিতু হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে নিজের কারিশমা দেখিয়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেন তিনি।
আগের দিন ৪ উইকেট পেয়েছিলেন এবাদত। তার বলে আউট হন- উইল ইয়ং, ডেভন কনওয়ে, হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল। আজ (বুধবার) প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে রস টেলরকে বোল্ড করেন। এরপর নেন কাইল জেমিসনের উইকেট। সব মিলিয়ে ৪৬ রানে তার শিকার ৬ উইকেট। শাহাদাত হোসেন, রবিউল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলামের পর চতুর্থ পেসার হিসেবে টেস্টে ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন এই পেসার।
দেশে ও দেশের বাইরে মিলিয়ে বাংলাদেশের পেসাররা টেস্টে ৫ উইকেট পেয়েছেন ৯বার। শাহাদাত একাই এমন কীর্তি গড়েছেন চারবার। এছাড়া রবিউল দুইবার এবং মঞ্জুরুল ও রুবেল হোসেন পেয়েছেন একবার করে। এবাদত এই ক্লাবের নবম সংযোজন।
Discussion about this post