খেলাধূলা ডেস্ক
সাকিব-তাসকিন-শরিফুল-মোস্তাফিজ ভালো বল করলেও মিরাজ শুরুতে ছিলেন ছন্নছাড়া। প্রথম ৪ ওভারে খরচ করেন ৩৮ রান। যে কারণে মাহমুদউল্লাহকেও হাত ঘোরাতে হয়। শেষের দিকে গিয়ে সেই মিরাজই আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাছ থেকে বল চেয়ে নেন। অধিনায়ক তার ওপর আস্থা রেখে বল তুলে দেন. এপর সৃষ্টি হয় ইতিহাস!
ইনিংসের ৩৮ ওভারের মধ্যে শেষ দুই মূল বোলার সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদের দশটি করে ওভার। শেষ ১২ ওভারের মধ্যে দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের বাকি ছিল মাত্র ৭ ওভার। ফলে বাকি ৫ ওভার কে করবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছিল সংশয়।
কেননা দলের পঞ্চম বোলার, অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ নিজের প্রথম ৪ ওভারে খরচ করে বসেন ৩৮ রান। যে কারণে তার ওভারগুলো নিয়ে ভক্ত-সমর্থক পর্যায়ে দেখা যায় শঙ্কা। কেউ কেউ তো বলতে শুরু করেন, পঞ্চম বোলারের জায়গায়ই হয়তো হেরে যাবে বাংলাদেশ।
তা হয়নি! উল্টো শেষ স্পেলে আক্রমণে এসে ম্যাচটি পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে এনে দেন মেহেদি মিরাজ। প্রথম ৪ ওভারে ৩৮ রান দেওয়া মিরাজ, টানা পাঁচ ওভার বোলিং করে মাত্র ২৩ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট। যেখানে ছিলেন পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো ডেভিড মিলারও।
ডানহাতি অফস্পিনার হিসেবে ডানহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে বোলিং করা কঠিনই ছিল মিরাজের জন্য। তবু ডানহাতি ব্যাটারদের অনসাইডে বড় বাউন্ডারি রেখেই টানা পাঁচ ওভার বোলিং করেন তিনি। যেখানে মিলারের বিপক্ষে ৮ বলে খরচ করেন মাত্র ৫ রান, নিয়ে নেন মূল্যবান উইকেটটি।
নিজের শেষ ওভারে একটি করে চার-ছয় হজম করে ১১ রান না দিলে শেষ স্পেলে আরও কিপটে থাকতো মিরাজের বোলিং ফিগার। তা না হলেও, দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এ তরুণ স্পিনিং অলরাউন্ডার। আর এটি করার জন্য নিজে যেচে অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাছ থেকে বোলিং নেন মিরাজ।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তামিম জানিয়েছেন, প্রথম ৪ ওভারে ৪০ রান (আসলে ৩৮) দেওয়ার পরেও আত্মবিশ্বাস ছিল মিরাজের। যে কারণে নিজ থেকেই বোলিং চেয়ে নেন ম্যাচ বদলে দেওয়ার জন্য এবং সত্যিই তা করে দেখান।
শুধু বেলিং নয়, স্লগ ওভারে ব্যাটিংটাও ভালো করেছেন মিরাজ। ১৩ বলে করেছেন ১৯ রান। অধিনায়ক তামিম প্রশংসায় ভাসালেন এই অলরাউন্ডারকে, ‘আমি খুব খুশি যে আত্মবিশ্বাসটা মিরাজের মধ্যে আছে। এমন চাপের মধ্যে ডানহাতির সামনে ছোট বাউন্ডারিতে বোলিং করা, উইকেট এনে দেওয়া…। আমার মতে, সেও আমার ম্যান অব দ্য ম্যাচ।’
Discussion about this post