খেলাধূলা ডেস্ক
২৫ বলে দরকার ৬৫ রান। হাতে মাত্র ছিল তিন উইকেট। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের হার বলতে গেলে নিশ্চিতই হয়ে গেছে তখন। সেখান থেকে মার্কাস স্টয়নিস অসাধ্য সাধনের চেষ্টায় নামলেন।
অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত জয়ের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছিলেন তিনি। শেষ ওভারে রাজস্থানের দরকার ছিল ১৫ রান। ওই ওভারের শেষ দুই বলে স্টয়নিস চার আর ছক্কা হাঁকালেও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। ১৭ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে হতাশাভরা হৃদয়ে মাঠ ছাড়েন স্টয়নিস।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে লখনৌ সুপার জায়ান্টসকে তিন রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। চার ম্যাচে তিন জয় নিয়ে সঞ্জু স্যামসনের দল উঠে গেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
লক্ষ্য ছিল ১৬৬। রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে লখনৌ। ইনিংসের প্রথম দুই বলে ট্রেন্ট বোল্ট সাজঘরে ফেরান লোকেশ রাহুল আর কৃষ্ণাপা গৌতমকে। দুজনই করেন শূন্য।
এরপর জেসন হোল্ডার ব্যক্তিগত ৮ রানে প্রসিধ কৃষ্ণার শিকার হলে ১৪ রানে তিন উইকেট হারায় লখনৌ। কিছুটা সময় উইকেট ধরে ছিলেন দীপক হুদা। কিন্তু ২৪ বলে ২৫ রানের ধীরগতির এক ইনিংস খেলে তিনিও আউট হয়ে যান।
৫২ রানে চার উইকেট হারায় লখনৌ। এক ওভার পর আয়ুস বাদোনিও পাঁচ রান করে ফিরে গেলে জয়ের আশা বলতে গেলে শেষ হয়ে যায় লোকেশ রাহুলদের।
কুইন্টন ডি কক একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন। ওদিকে রানের চাপ বাড়ছিল। ১৬তম ওভারে এসে ধৈর্য হারান লখনৌ ওপেনার। ইয়ুজবেন্দ্র চাহালকে তুলে মারতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েন ডি কক (৩১ বলে ৩৯)।
ওই ওভারেই সুইপ করতে গিয়ে পেছনে স্ট্যাম্প খালি করে বোল্ড হন ক্রুনাল পান্ডিয়া (১৫ বলে ২২)। ১০২ রানে সাত উইকেট হারানো লখনৌর হার তখন বলতে গেলে সময়ের ব্যাপার। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেন স্টয়নিস। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি।
রাজস্থানের ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল চার উইকেট পেলেও খরচ করেন ৪০ রান। ৩০ রানে দুই উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট।
এর আগে ১৭ ওভার শেষে রাজস্থান রয়্যালসের বোর্ডে ছিল চার উইকেটে মোটে ১১৫ রানে। ২৫ বলে ২১ রানে ব্যাটিংয়ে ছিলেন সিমরন হেটমায়ার। ক্যারিবীয় এই ব্যাটার শেষ তিন ওভারে রীতিমত তাণ্ডব দেখালেন।
প্রতি ওভারে দুটি করে ছক্কা হাঁকান হেটমায়ার। তার ঝড়ো এক হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ছয় উইকেটে ১৬৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজস্থান।
৩৬ বলে ৬ ছক্কা আর এক বাউন্ডারিতে ৫৯ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন হেটমায়ার। তার এমন ব্যাটিংয়েই শেষ তিন ওভারে রাজস্থান যোগ করতে পেরেছে ৫০ রান।
হেটমায়ার এমন ইনিংস না খেললে বড় বিপদেই পড়তো রাজস্থান। টপঅর্ডারের জস বাটলার-সঞ্জু স্যামসনরা যে একেবারেই টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে পারেননি।
বাটলার ১১ বলে ১৩, দেবদূত পাডিক্কেল ২৯ বলে ২৯, সঞ্জু স্যামসন ১২ বলে ১৩ আর রসি ভ্যান ডার ডাসেন চার বলে করেন চার রান। পঞ্চম উইকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে নিয়ে ৫১ বলে ৬৮ রানের জুটিতে দলকে অনেকটা এগিয়ে দেন হেটমায়ার। ২৩ বলে ২৮ রান করে আহত অবসরে যান অশ্বিন।
তবে হেটমায়ার একটা প্রান্ত ধরেই রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে বিধ্বংসী এক ইনিংসই উপহার দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
লখনৌ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন কৃষ্ণাপা গৌতম। চার ওভারে ৩০ রানে দুটি উইকেট নেন তিনি। জেসন হোল্ডারও দুই উইকেট শিকার করেন, তবে চার ওভারে ৫০ রান খরচ করেন ক্যারিবীয় এই পেসার।
Discussion about this post