খেলাধূলা ডেস্ক
করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় অনেকটা হঠাৎ করেই ফাউন্ডেশন চালু করার ঘোষণা দেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায় থেকে অনুদান সংগ্রহ করে অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সাকিব জানান, ফাউন্ডেশন চালু করতে চেয়েছিলেন আরও পরিকল্পনা করে, সুন্দর কোন সময়ে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দেশের বিপদে আর দেরি করতে চাননি। ভেবেছেন এখন চালু করলে অন্তত কিছু মানুষের উপকারে আসা যাবে।
শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটের যাত্রা শুরু হলো। এ উপলক্ষে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসেছিলেন সাকিব। লাইভে বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সবাইকে অসহায়দের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘প্রথমে স্পোর্টস সম্পর্কিত চিন্তা ছিল যেটা পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করবে বলে ইচ্ছে ছিল। আসলে ঐ কারণেই এটা (ফাউন্ডেশন) শুরু করা। যদিও আমি এটার যাত্রা আরও পরে করবো ভেবেছি। সময় যখন হয় এবং সবকিছু মনমত প্রস্তুত করতে পারি তখন। কিন্তু এই মহামারীর কারণে আসলে সব পরিস্থিতিই বদলে যায় এবং এই সময়ে যদি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মানুষের সাহায্যে কিংবা স্বাস্থ্য খাতে কোন সাহায্য করা যায় কিনা এই চিন্তায় শুরু করা।’
সাকিব বলেন, ‘সবাই সবার জায়গা থেকে সাহায্য করছে আমি নিশ্চিত। এই বিপদের সময়ে আমাদের দেশে, শুধু আমাদের দেশে নয় সব দেশেই বিপদ। এর ফলেই আসলে চিন্তাটা শুরু, কাজ করার ইচ্ছেটা জেগেছে।’
করোনাভাইরাস, লকডাউন বিষয়গুলো সবচেয়ে বিপদে ফেলেছে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের। আয় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের কথা ভাবতে বললেন সাকিব, ‘লোকজন বাইরে যাচ্ছে বলে আমরা সমালোচনা করছি। আমরা আসলে জানছি না যে মানুষ কতোটা প্রয়োজনে আসলে বাইরে যাচ্ছে। আমার মনে হয় এই বিষয়ে চিন্তা করা উচিত। ঢাকায় যে পরিমাণ বস্তি আছে তাদের তো ঘরের ভেতরেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না। তারা এটা দূরত্ব কিভাবে মেনে চলবে? একদিন বাইরে না গেলে তারা খাবার পাচ্ছে না। এ জায়গাতে আমরা সবাই মিলে সাহায্য করতে পারি অবদান রাখতে পারি তবে আমার মনে হয় বিপদ উতরাতে পারব।’
সাকিব বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা দিন আনে দিন খায় তাদের জন্য খুবই দুর্বিসহ ব্যাপার। তাদের জন্য ঘরে বসে থাকাটা খুবই কষ্টকর। আমাদের জন্য বোঝা কঠিন যে তারা কী কারণে বাইরে যাচ্ছে বা বের হচ্ছে। আমাদের সবারই চেষ্টা করা উচিৎ এই মহামারী থেকে মুক্তি পাওয়া। সে জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই আমাদের সাহায্য করতে পারে। সুতরাং আলহামদুলিল্লাহ আমরা যারা সচ্ছল মানুষ আছি তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি যারা সুবিধাবঞ্চিত আছে তাদের যেন সাহায্য করে এই মহামারী থেকে উতরাতে পারি এবং স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরতে পারি।’
বিভিন্ন পর্যায়ে অনুদান সংগ্রহ করে তা বিপদে পড়া মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে। সাকিব আল হাসান জানালেন, তার লক্ষ্য ভবিষ্যতে এই ফাউন্ডেশনের কাজে পরিধি আরও বড় হবে।
ফাউন্ডেশন থেকে ভবিষ্যতে কী কী উদ্যোগ নিতে চান, লাইভে এমন প্রশ্নের মুখে পড়লে সাকিব বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ ইচ্ছা আছে। হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ এ ধরনের সেবা যদি দিতে পারি তাহলে এর থেকে ভালো কিছু আর হতে পারে না। আমি ক্রিকেটের মানুষ, যদি একটি একাডেমি করতে পারি এ ফাউন্ডেশনের থেকে তাহলে এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে না।’
Discussion about this post