ক্রীড়া ডেস্ক
তাকে বলা হয় ক্রিকেট দেবতা। ২৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। কখনো ভেঙেছেন নিজের গড়া রেকর্ড। কিংবদন্তি শচীন টেনডুলকারের জন্মদিন আজ ২৪ এপ্রিল। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মরণ ভাইরাস করোনার এই সময়ে জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ রেখেছেন লিটল মাস্টার। বরং তার চিন্তায় এখন কোভিড-১৯ মোকাবিলা। এই করোনা ইস্যুতে তিনি দেখা করেছেন ভারতের প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে। অসহায় মানুষের জন্য দিয়েছেন অনুদান। বলেছেন, ২৪ বছর মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন, এবার তাদের জন্য প্রার্থনার সময়।
ভারতীয় একটি সংবামাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন এই সময়ে নিজের ভাবনার কথা।
আমাদের সবার জীবনের খুবই অপ্রত্যাশিত একটা অধ্যায়। কে ভাবতে পেরেছিল বলুন তো যে, গোটা বিশ্ব এভাবে দিনের পর দিন লকডাউনে থাকবে! আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছি। গোটা দেশ, গোটা পৃথিবী একত্রিত হয়ে লড়ছে। সব রকমভাবে আমরা সবাই চেষ্টা করছি যাতে করোনাভাইরাসকে হারানো যায়।
আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে। যেভাবে লড়াই করছি, সেভাবেই এককাট্টা হয়ে লড়ে যেতে হবে। ছাড়লে চলবে না, হাল্কা দিলে হবে না। মনে রাখতে হবে, আমরা একে অন্যের জন্য লড়াই করছি।
করোনার সঙ্গে লড়াই আমাদের চরিত্রের অগ্নিপরীক্ষা। মনে-মনে বলে যেতে হবে, আমরা একে অন্যের সঙ্গে আছি এই লড়াইয়ে। টিম স্পিরিট ছাড়া কিন্তু আমরা এগোতে পারব না।
(প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে) আমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এই কঠিন সময়ে ভক্তদের জন্য আমি কী বার্তা দিতে চাই। প্রশ্নটা শুনে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। কারণ, চব্বিশ বছর আমি ভারতের হয়ে খেলেছি। আমার ভক্তরা সব সময় আমার জন্য প্রার্থনা করে গিয়েছেন যে, শচিন যেন আউট না হয়। আমি তাই বলেছিলাম, এই সময়টায় আমি সব ভক্তের জন্য প্রার্থনা করতে চাই যেন তাঁর ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন। এবার আমি প্রার্থনা করছি, সহাই ভালো থাকুন, আউট হবেন না।
শুধু খেলা নয়, সবকিছুর উপরেই সাংঘাতিক প্রভাব পড়তে চলেছে। লকডাউন সকলের জন্য, সব জগতের মানুষের জন্য। সবকিছুই নিষ্ক্রিয় এই মুহূর্তে। সেই কারণে আমি টিম স্পিরিটের ওপর জোর দিচ্ছি। সকলে এক থাকতে হবে। এই মুহূর্তে জীবন বাঁচানোটাই সকলের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশেষভাবে বলতে চাই চিকিৎসা মাধ্যমের সঙ্গে জড়িত সকলের কথা। যেভাবে নিজেদের এবং নিজেদের পরিবারের ঝুঁকি নিয়েও তারা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মানুষের কাজে, তার কোনও তুলনা হতে পারে না। কোনও শব্দই যথেষ্ট নয় তাদের অবদানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। আমাদের উচিত, এই মানুষদের আত্মত্যাগকে সম্মান করা, তাদের সব রকমভাবে সমর্থন করা। আমি বলব, এই সময়টা আমাদের পেশার লোকজনদের চেয়েও সেই সব ব্যক্তিদের নিয়ে কথা বলার সময়, যারা নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।
(করোনার পর সম্ভাব্য ফাঁকা মাঠ) ফাঁকা মাঠে খেলার ব্যাপারটা কী রকম যেন একটা শোনাচ্ছে। খুবই আশ্চর্যজনক একটা ব্যাপার হবে। আমি মনে করি, খেলোয়াড়রা গ্যালারিভর্তি দর্শকদের থেকে প্রচুর এনার্জি পায়। ভাবুন তো একবার, কেউ একটা দারুণ বাউন্ডারি মারল আর গোটা মাঠ নিশ্চুপ, কোনও প্রশংসাসূচক ধ্বনি বা হাততালি নেই! কী রকম অদ্ভুত হবে না! আমি তো মনে করি, একটা সুন্দর শট মারার পরে যখন দর্শকেরা তারিফ করেন, সেখান থেকে লম্বা ইনিংস খেলার এনার্জি পাওয়া যায়। ভাল করার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। বোলারদের ক্ষেত্রেও একই জিনিস হয়। দর্শকহীন মাঠে খেলা হলে সেই আবহটাই যে থাকবে না!
Discussion about this post