খেলাধূলা ডেস্ক
ম্যাচ জুড়ে সৌদি আরবকে কোণঠাসা করে রেখে দুর্দান্ত ফুটবল খেলল মেক্সিকো। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ মিনিটের দুই গোলে এগিয়েও গেল তারা। অন্য ম্যাচের ফলও পক্ষেই ছিল। দরকার ছিল কেবল আরেকটি গোল। কিন্তু সেই ম্যাচ শেষ হতে উল্টো নিজেরাই গোল খেয়ে বসল দলটি। ফলে, জিতেও একরাশ হতাশা যোগ হলো মেক্সিকো শিবিরে। তাদের চেয়ে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থেকে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের টিকেট পেল পোল্যান্ড।
সৌদির এই এক গোলেই ভিন্ন কোনো হিসাব-নিকাশ ছাড়াই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হলো পোলিশদের। অন্যদিকে সৌদি আরবকে ২-১ গোলে হারিয়েও কোনো লাভ হলো না মেক্সিকোর। গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নিতে হলো তাদের।
সেই জয়টা পেলোও। কিন্তু ৯০+৫ মিনিটে হজম করা গোলটিই হলো যা সর্বনাশের মূল। তাতে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে গেলো মেক্সিকো। যার ফলে বিদায় ঘটলো তাদের।
তবে, ওই গোলটা হজম না করলেও বিদায় হতো মেক্সিকোর। কারণটা ভিন্ন। মেক্সিকো এবং পোল্যান্ডের পয়েন্ট এবং গোল ব্যবধান সমান হলে ফিফার ভিন্ন এক নিয়মে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যেতো পোল্যান্ড।
কারণ, হলুদ কার্ড বেশি দেখেছে মেক্সিকো। তারা ৭টি হলুদ কার্ড দেখেছে। অন্য দিকে ৫টি হলুদ কার্ড দেখেছে পোল্যান্ড। হলুদ কার্ডের এই পার্থক্যের কারণে বিদায় ঘটতো মেক্সিকোর। তবে সে হিসেবে যেতে হয়নি সৌদি আরবের শেষ গোলটার কারণে।
প্রথমার্ধ গোলশূন্যই ছিল মেক্সিকো এবং সৌদির ম্যাচ। অনেক আক্রমণ করেও গোল বের করতে পারেনি মেক্সিকানরা। সৌদিও পাল্টা আক্রমণে উঠে চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু গোল পায়নি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতে না হতেই গোল পেয়ে যায় মেক্সিকো। বরং, ৫ মিনিটের ব্যবদানে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। ৪৭ মিনিটে প্রথম গোল করেন হেনরি মার্টিন। কর্নার কিক থেকে ভেসে আসা বলে অসাধারণ দক্ষতায় সৌদির জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।
৫ মিনিট পর আবারও গোল। ৫২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন লুইস শাভেজ। দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক। বাম পায়ের ফ্রি-কিকটা ডান কোন দিয়ে প্রবেশ করলো সৌদি আরবের জালে। আল ওয়াইজ মুভ করারও সময় পাননি।
এরপর মেক্সিকানরা আরেকটি গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। কারণ, তারা বুঝতে পেরেছিলো, পোল্যান্ডের সঙ্গে গোল ব্যবধান সমান হয়ে যাবে এবং হলুদ কার্ড দেখায় তারা পিছিয়ে। কিন্তু তৃতীয় গোল তো দুরে থাক, ইনজুরি সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে উল্টো গোল হজম করে বিদায় বরণ করে নিলো তারা।
সালেম আল দাওসারি এ সময় গোলটা করেন। হাতান বাহব্রির সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান বল দেয়া নেয়া করে বক্সে ঢুকে পড়েন এবং ওচোয়াকে বোকা বানিয়ে মেক্সিকোর জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।
৮৭ মিনিটে একবার সৌদির জালে বল প্রবেশ করিয়েছিলো মেক্সিকো। উরিয়েল আনতুনা আল ওয়াইজকে ফাঁকি দিয়ে বলটি জালে জড়িয়ে যখন উল্লাস করছিলেন, তখন ভিএআর চেক করে জানিয়ে দেয়া হলো গোল হয়নি। অফসাইড ছিলো।
তার আগে ৭৮ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট করে দেন রদ্রিগেজ। লোজানোর কাছ থেকে বল পেয়ে তিনি বলটি বাইরে মেরে দেন। এর আগে ৭৩ মিনিটে আরও এক ফ্রি-কিক থেকে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন শাভেজ। কিন্তু তার শট দারুণ দক্ষতায় তালুবন্দী করে নেন আল ওয়াইজ।
ম্যাচের শুরুতেই গোল দিয়ে এগিয়ে যেতে পারতো সৌদি আরব। তৃতীয় মিনিটে আল শেহরির শট অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন মেক্সিকো গোলরক্ষক গুইলার্মো ওচোয়া। ফিরতি বলটিতেই কাউন্টার অ্যাটাক। এবার অ্যালেক্সিস ভেগা অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন সৌদি গোললক্ষ্যে। কিন্তু আল ওয়াইজও দারুন দক্ষতায় গোল থেকে দলকে রক্ষা করেন।
আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ড ম্যাচ শেষ হওয়ার পরও নিজেদের ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল মেক্সিকো। পরের মিনিটেই একটি গোল শোধ দেয় সৌদি আরব।
বক্সের বাইরে হাতান বাহেবরিকে পাস দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন সেলিম আল-দাওসারি। সতীর্থের ফিরতি পাস ধরে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি। মেক্সিকোর ক্ষীণ যে আশা ছিল, সেটিও শেষ হয়ে যায় তাতে।
Discussion about this post