খেলাধূলা ডেস্ক
আবারও মেসি যাদু দেখলো বিশ্ব ! তিনি গোল করেছেন, গোল করিয়েছেন! মেসি ও আলভারেজের গোলে ৩-০ গোলে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে চরম হতাশায় ডুবিয়ে আজ ফাইনালে আর্জেন্টিনা।
লুসাইল স্টেডিয়ামে ২০২২ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া। কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় নেই আর্জেন্টিনার গনসালো মন্তিয়েল ও মার্কাস আকুনা। মন্তিয়েল না থাকলেও আগের ম্যাচের শুরুর একাদশে ছিলেন আকুনা। তার জায়গায় ক্রোয়োশিয়ার বিপক্ষে খেলছেন নিকোলাস তাগ্লিয়াফিকো। এছাড়া এই ম্যাচেও শুরুর একাদশে নেই আনহেল দি মারিয়া। তবে লিয়ান্দ্রো পারেদেস ফিরেছেন একাদশে। কিন্তু বাদ পড়েছেন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেস।
আজকের ম্যাচে মাঠে নেমেই দুইটি রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (২৫) খেলার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ফলে জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাথিউসের গড়া রেকর্ডে ভাগ বসালেন মেসি। আরেকটি রেকর্ডে মেসি ছাড়িয়ে গেছেন মেক্সিকোর সাবেক ফুটবলার রাফা মার্কেজকে। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে মেসির ম্যাচসংখ্য এখন ১৯টি। আগের ম্যাচেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন মার্কেজকে। সেমিফাইনালে খেলতে নেমে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন মার্কেজকেও।
আর্জেন্টিনা আজ নেমেছে ৪-৪-৪ ফরম্যাশনে। মেসির সঙ্গে আক্রমণ সামলানোর দায়িত্বে আছেন হুলিয়ান আলভারেস। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া নেমেছে ৪-৩-৩ ফরম্যাশনে। তবে দুই দলই শুরু করে রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে। ক্রোয়েশিয়া শুরুতে আর্জেন্টাইন রক্ষণে হানা দিলেও কার্যকর কোনো শট নিতে পারছিল না। উল্টো গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণে উঠতে শুরু করে আর্জেন্টিনা। এর ফলও আসে ৩৪তম মিনিটে।
এদিন ম্যাচের শুরুতে নিজেদের মধ্যে বল ধরে খেলার চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। ছোট ছোট পাসে আক্রমণে উঠেন মেসিরা। অন্য দিকে ক্রোয়েশিয়া খেলছিল প্রেসিং ফুটবল। মেসিদের পায়ে বল থাকলেই তাড়া করছেন মদ্রিচরা।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। বল নিয়ে গোলমুখে ছুটতে থাকা হুলিয়ান আলভারেজকে ঠেকাতে গিয়ে বক্সেই ফাউল করে বসেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজালেন রেফারি। আর তা থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি।গোলরক্ষকের বাঁ দিক দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন তিনি। এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে এটা তার ১১তম গোল। আর্জেন্টিনার জার্সিতে বিশ্বকাপে এখন সচেয়ে বেশি গোলের মালিক তিনি। আগের ম্যাচে গোল করে তিনি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। এবার সাবেক ফরোয়ার্ডকে ছাড়িয়ে গেলেন মেসি। তার ওই গোলে বড় ধাক্কা খায় ক্রোয়েশিয়া। কারণ রক্ষণ কিছুটা ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে। আর সেই সুযোগে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা।
৩৯তম মিনিট মাঝমাঠ থেকে মেসি বল বাড়িয়ে দেন প্রতিপক্ষের বক্সের কাছাকাছি থাকা আলভারেসের দিকে। বল পেয়েই সোজা ক্রোয়াটদের রক্ষণে ঢুকে পড়েন । কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কাছ থেকে আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন তরুণ স্ট্রাইকার। যদিও এতে কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল। এরপর প্রথমার্ধের একদম শেষদিকে অল্পের জন্য গোলের দেখা পায়নি ক্রোয়েশিয়া। ফলে দুই গোল হজম করেই বিরতিতে যায় তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণ বাড়ায় ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু নিজেদের রক্ষণ মজবুত রাখে আর্জেন্টিনা। ফলে গোলের মুখ খুলতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। কিছুটা রক্ষণাত্মক খেললেও হঠাৎই প্রতি আক্রমণ চালান মেসিরা।
ম্যাচের ৭০ মিনিটে আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যাচের তৃতীয় গোল করেন আলভারেজ। তবে গোলটি যত না তার, তার থেকে অনেক বেশি মেসির। ডান প্রান্তে সাইড লাইনের কাছে বল ধরে ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে এগিয়ে যান মেসি। পায়ের কাজ দেখাতে দেখাতে বক্সে ঢোকেন। তার পরে বল রাখেন অরক্ষিত আলভারেজের কাছে। ডান পায়ে গোল করে ব্যবধান বাড়াতে ভুল করেননি আলভারেজ।যাতে ৩-০ গোলের জয় নিয়েই আর্জেন্টিনা চলে যায় বিশ্বকাপের ফাইনালে।
Discussion about this post