জীবন শৈলী ডেস্ক
পরিবারের ছোট সদস্যরা এমনকি পরিণত বয়সের সন্তানকেও সবজি খাওয়াতে বেগ পেতে হয় অনেক মায়ের। খেতে বসে সবজি দেখলে তারা নাক সিটকায়, মুখ বাকায়, জেদ করে।
তবে সবজি না খাওয়ালে তো সুষম পুষ্টি মিলবে না। তাহলে উপায়?
শিশু ছোট থেকে বড় হওয়ার এ জার্নিতে আমাদের প্রত্যেকের অনেক এনার্জি প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে ছোটদের আরও বেশি এনার্জি লাগে। তাই তাদের সুষম আহারে ডিম, মাছ ও মাংসের সঙ্গে সবজিও থাকা দরকার।
সবজিতে ক্যালোরি কম থাকে এবং ফাইবার থাকে বেশি। তবে দুধ বা দানা শস্যের মতো সবজি এমনি এমনি খাওয়া যায় না। ভালো করে না রান্না করলে সবজির স্বাদ পাওয়া যায় না। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে ভালো করে রান্না করলেও শিশুরা সবজির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে না। বরং সুস্বাদু চটপটে জাঙ্ক খাবারের দিকেই তাদের আকর্ষণ বেশি। তাহলে, আজ থেকেই শুরু হোক সবজি খাওয়া আর খাওয়ানোর অভিযান!
শিশুকে বোঝাতে হবে যে সবজি মানেই সেটা সব সময় বিস্বাদ নয়। বাড়িতে যদি ভালো করে সেটা রান্না করা যায়, খেতে ভালোই লাগবে। যখন সবজি রান্না করা হচ্ছে তখন, কিছু দায়িত্ব আপনার শিশু সন্তানকেও দেওয়া যায়। গাজর, আলু, মটরশুটি এগুলো যদি সে ধুয়ে দেয় বা রান্নার সময় একটু খুন্তি নাড়িয়ে দেয়, তাহলে তার মনে হবে সেও অনেক কিছু করেছে। যা জিনিসটা খাওয়ার প্রতি তার আকর্ষণ বাড়াবে।
সবজি দিয়ে ফ্রাইড রাইস: বাসায় রান্না করা ভাত, খিচুরিতে আগ্রহ না থাকলেও রেস্তোরাঁর মতো করে ফ্রাইড রাইস পেলে শিশুদের খুশির সীমা থাকে না। সঙ্গে মুরগি ভাজা পেলে তো কথাই নেই। একটু বুদ্ধি খাটালে ওই অস্বাস্থ্যকর ‘ফ্রাইড রাইস’কেই স্বাস্থ্যকর বানানো সম্ভব। বুদ্ধিটা খুবই সহজ। ‘ফ্রাইড রাইস’ তৈরির সময় সঙ্গে গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, পেঁপে ইত্যাদি কেটে মিশিয়ে দিন।
আরও পড়ুন: সন্তানের বাড়ন্ত বয়সে যা শেখানো দরকার
সবজি হোক নাস্তা: যেকোনো ফল বা সবজি ঘটা করে খেতে হবে এমন তো কথা নেই। শসা, গাজর, শাকপাতা, মটরশুটি ইত্যাদি স্ন্যাকস বা নাস্তাও হতে পারে। সঙ্গে থাকতে পারে আপেল, পেয়ারা, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি ফলও। এগুলো কেটে বিকালের নাস্তা হিসেবে খাওয়ানো যেতেই পারে।
স্মুদির সঙ্গে সবজি: ফল কিংবা ফলের শরবত খেতে শিশুরা আগ্রহী না হলেও ‘স্মুদি’ আবার তাদের কাছে মুখরোচক ব্যাপার। বিভিন্ন ফল একসঙ্গে মিশিয়ে ঘরে বসেই ব্লেন্ডারে সহজেই স্মুদি বানিয়ে ফেলতে পারেন। এরসঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন পালংশাক, বাঁধাকপি, পেঁপে, শসা, গাজর ইত্যাদি কাঁচা খাওয়া যায় এমন যেকোনো সবজি। ফলের স্বাদের মাঝে শিশুরা সবজির স্বাদ আলাদা করতে পারবেনা, সবজি খাওয়াও হয়ে যাবে।
এই স্মুদিকেই আইসক্রিম বক্সে করে ফ্রিজে রেখে জমিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন ‘পপসিকল’ যা শিশুরা আরও আগ্রহ নিয়ে খাবে।
স্বাদ বাড়াতে ‘রোস্টিং’: ফুলকটি, ব্রকলি, আলু, গাজর ইত্যাদি ‘রোস্টিং’ করলে তার স্বাদ শিশুদের জন্য আরও বেশি লোভনীয় হবে। ভাজাপোড়া খেতে প্রায় সবাই পছন্দ করে। সেক্ষেতে ফুলকপির চপ, বিভিন্ন সবজির পাকোড়া ইত্যাদিও হতে পারে শিশুদের সবজি খাওয়ানোর সহজ উপায়।
ধৈর্য না হারিয়ে ধীরে ধীরে আপনার শিশু সন্তানকে সবজি খাওয়ানো অভ্যাস করতে হবে। বকুনি দিলে জিনিসটা খাওয়া নিয়ে তার মনে ভয় আর অনিচ্ছা বাড়বে বই কমবে না।
Discussion about this post