বিনোদনডেস্ক
গত সপ্তাহে বলিউড সুপারস্টার ইরফান খান হার মানেন ক্যান্সারের কাছে। প্রায় দুই বছর এই রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে মারা যান তিনি।তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের ত্রিঙ্গালওয়াড়ি দুর্গের জন্য বিখ্যাত ইগাতপুরি গ্রাম। এক দশক আগে এখানে বেড়াতে এসে একটি জমি কিনেছিলেন ভারতের অভিনেতা ইরফান খান। এটাই ছিল তার অবকাশযাপনের খামারবাড়ি। সেই থেকে গ্রামটির সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল।
তবে নায়কের প্রয়াণে এবার পুরোপুরি বদলে যাচ্ছে সেই গ্রামের নাম। এ গ্রামে কোনো সিনেমা হল নেই। কিন্তু সেখানকার লোকজন প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে যান শুধু ইরফান খানের ছবি দেখবেন বলে। অবশেষে সেই নায়কের মৃত্যুতে গ্রামের নাম হতে চলেছে ‘হিরো-চি-ওয়াদি’।
এদিকে ওই গ্রামের (ইগাতপুরি) শতাধিক ছাত্রছাত্রীর পরিবারই কৃতজ্ঞ ইরফানের কাছে। বহু গরিব পরিবারকে নানাভাবে উপকার করেছেন তিনি। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের দিকে নিরবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার এই অবদানের কথা মাথায় রেখে নিজেদের গ্রামের নাম বদলে দিলো গ্রামবাসী।
এদিকে মারাঠি ভাষায় রাখা নতুন নাম ‘হিরো-চি-ওয়াদি’ মানে হিরোর প্রতিবেশী।
গ্রামটির এক নেতা জানান, যখনই প্রয়োজন হয়েছে, ইরফান ভাই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাদের জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছেন। স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতি সাধনে সাহায্য করেছেন।
গ্রামের অনেক উপজাতি পরিবারকে সাহায্য করেছিলেন ইরফান। এরমধ্যে ছিল এলাকার উন্নয়নসহ জরুরি প্রয়োজনে মেডিক্যাল অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়া। গ্রামের স্কুলগুলোতে আর্থিক সহায়তা দিতেন তিনি। যখনই গ্রামবাসীর প্রয়োজন হতো, বিখ্যাত এই তারকা সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন।
ইগাতপুরি জেলা পরিষদ সদস্য গোরাখ বোড়কে বলেন, ‘তিনি ছিলেন গ্রামের অনেক পরিবারের রক্ষাকর্তা। কেউ সাহায্য চাইলে তিনি কখনও না করতেন না।’
উপজাতি পরিবারগুলোকে সাহায্য দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন ইরফান খান। এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গল্পের বই, পাঠ্যবই, রেইনকোট ও সোয়েটার পাঠিয়েছেন তিনি। এছাড়া এক ডজন কম্পিউটার দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বিভিন্ন উৎসবে শিশু-কিশোরদের জন্য মিষ্টি পাঠাতেন।
তিনি আমাদের অভিভাবকের মতো। তাই গ্রামের নাম বদলে দিয়ে নায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই আজীবনের মতো।
Discussion about this post