বিনোদনডেস্ক
আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর রেশ ধরেই পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে নেটফ্লিক্সের পর্দায় উঠে আসছে বর্ণবাদবিরোধী ছবি ‘দ্য ফাইভ ব্লাডস’। এটি নির্মাণ করেছেন প্রখ্যাত আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ নির্মাতা স্পাইক লি। অস্কার জয়ী এই নির্মাতার বেশিরভাগ ছবিতে ফুটে উঠেছে সমাজের নানান বৈষম্যের কথা। তবে তার ‘দ্য ফাইভ ব্লাডস’ অন্যান্য নির্মাণের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। কারণ বর্তমানে আমেরিকায় এই সমস্যা কতটা প্রকট আকার ধারণ করেছে তা জর্জ ফ্লয়েডের নির্মম হত্যাই প্রমাণ। তবে বর্ণবাদের এই অস্থির সময়ে ছবিটি মুক্তি পাওয়া কিছুটা কাকতালীয় বটে। ছবির মূল গল্প সাজানো হয়েছে চার বন্ধুকে ঘিরে। তারা ভিয়েতনামে যুদ্ধ শেষ করে নিজ দেশে ফিরে আসে। এরপর কেটে যায় প্রায় ৫০ বছর। দীর্ঘসময় পর তারা আবার একসঙ্গে মিলিত হয়।
কিন্তু তখন তারা জানতে পারে, তাদের দলপ্রদান মার্টিন কিং-কে গুম করে হত্যা করে নিজ দেশের সেনাপ্রধানরা। কিন্তু কী তার অপরাধ, তা তারা সন্ধান করতে থাক। একটা সময় তারা আবিস্কার করে, কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার অপরাধে তাদের দলনেতাকে হত্যা করা হয়। আর পুরো বিষয়টি ছিল চিরকালের শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধের একটি অংশ। কারণ শ্বেতাঙ্গ সেনাপ্রধানরা কৃষ্ণাঙ্গ অফিসারদের সহ্য করতে পারে না। তখন চার বন্ধু আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চায়। ফলে তাদের পড়তে হয় সরকারের রোষানলে। এভাবে ঘটনা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এরই মধ্যে ছবিটি ঘিরে এর মধ্যে সমালোচক থেকে শুরু করে সিনেপ্রেমীদের মধ্যে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ এই ছবিতে আমেরিকার এই চিরন্তন সমস্যা চোখে আঙুল দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি বর্ণবাদের এই কালো থাবা দেশের সর্বোচ্চ সামরিক বাহিনীর ভেতরেও কতটা প্রভাব ফেলেছে তাও উঠে এসেছে। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সিনেমা নির্মাণের সাহস অবশ্য নির্মাতা স্পাইক লি আগেও বেশ কয়েকটি সিনেমায় দেখিয়েছেন। সম্প্রতি ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই নির্মাতা বলেন, ‘ছবিতে বেশ কিছু স্পর্শকাতর বিষয় তুলে এনেছি। আর এই কাজটি করার জন্য আমি কাউকে তোয়াক্কা করি না। এখানে মোহাম্মদ আলী থেকে শুরু করে আমেরিকার প্রথম রেভুলেশনারি যুদ্ধে মারা যাওয়া ক্রিসপার এটাকস কীভাবে বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন তাও দেখানো হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ছবিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চরিত্রও লিন্ডো নামের চরিত্রের অবয়বে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’
যদিও ছবির গল্প শুরুর দিকে এমনটা ছিল না। এর রচয়িতা ড্যানি মিলসন ও পল ডি মিও চারজন শ্বেতাঙ্গ সামরিক কর্মকর্তাকে ঘিরে গল্প সাজিয়েছিলেন। পরে স্পাইক লি চার কৃষ্ণাঙ্গ নিয়ে ছবির গল্প সাজান। ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেলরয় লিন্ডো, জনাথন মেজরস, নর্ম লুইস, ক্লার্ক পিটার্স প্রমুখ। ১৫৪ মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবিটি আগামীকাল থেকে নেটফ্লিক্সে দেখা যাবে।
Discussion about this post