বিনোদনডেস্ক
মুহম্মদ হান্নান পরিচালিত ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ সিনেমাটি ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। এ ছবির ‘পড়েনা চোখের পলক’ গানটি সেই সময় সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করছিলো। হাটে, ঘাটে, গঞ্জে দিনে রাতে বাজতো এই গান। বহু কমেডিয়ান এই গান প্যারোডি করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
গানটির জনপ্রিয়তা এতোই ছিলো যে পরবর্তীতে এই গানের নামে সিনেমা নির্মাণ হয়। যেখানে অভিনয় করে সাফল্য পান শাকিব খান।
তবে এই গান যার ভাগ্যকে খুলে দিয়েছিলো তিনি হলেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। একটি গানের মাধ্যমে রিয়াজ রাতারাতি পৌঁছে গেলেন সারা বাংলার ঘরে ঘরে। রোমান্টিক এ গানে পারফর্ম করে তিনি হয়ে উঠলেন তারুণ্যের সেরা পছন্দের নায়ক।
আজ এন্ড্রু কিশোরকে হারানোর দিন। এদিনে এন্ড্রু কিশোরকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন রিয়াজ। লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-
‘আমি দাদার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তিনি আমাদের বাস্তবিকই প্লেব্যাক সম্রাট। তার গান এ দেশের সিনেমাকে আলোকিত কিরেছে। তিনি আমাদের সিনেমার একজন প্রাণপুরুষ বলেই মনে করি আমি’- এভাবেই এন্ড্রু কিশোরকে নিয়ে বলেন রিয়াজ।
তিনি বলেন, ‘দাদার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে। আমার জন্য যেটি প্লাস হয়েছিল সেটি হচ্ছে দাদা যখন গান গাইতেন তখন আমার স্কেলে মিলিয়ে গাইতেন। এইটা দাদার অদ্ভুত একটা গুণ ছিল বলা যায়। যখন যার জন্য গাইতেন তখনই তিনি এটা করতেন। আরেকটা বিষয়, দাদা আনন্দ নিয়ে গান গাইতেন।
‘পড়ে না চোখের পলক’ গানে আমার পারফর্ম দেখে দাদা প্রশংসা করেছিলেন। বলেছিলো তুই দারুণ অভিনয় করেছিস। আমিও বলেছিলাম দাদা আপনি এতো সুন্দর করে গানটি গেয়েছেন যে আমি সুন্দর করে পারফর্ম না করে থাকতে পারিনি।’
‘আমার যতগুলো হিট সিনেমা আছে বেশিরভাগ ছবিতেই মনে হয় এন্ড্রু দা’র কণ্ঠের গান আছে। বলা যায়, আমার বেশিরভাগ হিট গান দাদারই গাওয়া। সব সিনেমার গানেই আলাদা আলাদা করে স্মৃতি আছে। এসব বলে শেষ করা যাবে না’- রিয়াজের মন্তব্য।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের বাইরে দাদার সাথে আমার অনেক শো করা হয়েছে। তিনি খুবই মিশুক প্রকৃতির ছিলেন। বাইরে গেলে রাতের পর রাত আমরা প্রচুর আড্ডা দিতাম।তিনি খুবই আড্ডা প্রিয় মানুষ ছিলেন।’
একজন গায়ক এন্ড্রু কিশোর এবং একজন মানুষ এন্ড্রু কিশোরকে কীভাবে দেখেছেন? উত্তরে এ নায়ক বলেন, ‘আমি তো অনেক শিল্পীর সঙ্গেই কাজ করেছি। একেকজন একেকজনের মতো। তবে এন্ড্রু দা’র মধ্যে কোনো অহংকার ছিলো না। একদম মাটির মানুষ ছিলেন। উনি সবার সঙ্গে মিশে যেতে পারতেন খুবই সহজেই। তার মধ্যে কোনো স্টারইজম দেখিনি। অথচ আমাদের গানে তার মতো ক’জন মানুষ আছে বলুন! আজকাল অনেক ছেলে মেয়ে গান গায়। তাদের ভাবসাব ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখলে মাথা ঘুরে যায়।
আর এন্ড্রু দাদা এতো বড়শিল্পী হওয়ার পরও তার মধ্যে কোনো অহমিকা দেখিনি। দাদার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
Discussion about this post