বিনোদন ডেস্ক
করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ফকির আলমগীরের ভাতিজা মাহবুবুর রহমান ফকির এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে রেখে গেছেন।
এর আগে, গত ১৫ জুলাই থেকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ফকির আলমগীরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুলাই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। ১৫ জুলাই সন্ধ্যা থেকে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
উল্লেখ্য, ফকির আলমগীর একজন কণ্ঠযোদ্ধা। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ছিলেন। অবশ্য এর আগে ষাটের দশক থেকেই গণসংগীত গেয়ে আসছিলেন তিনি। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অসামান্য ভূমিকা রাখেন তিনি।
তিনি গাইতেন মানুষের জন্য, দেশের জন্য। তার গানে উঠে আসত মানবতার কথা। মানুষের অধিকারের কথা। পুরোটা জীবন নিজেকে ঢেলে দিয়েছেন সংগীতের প্রতিবাদী ধারায়। বজ্রকণ্ঠে অনুপ্রাণিত করেছেন বঞ্চিত মানুষদের, সাহস যুগিয়েছেন সাধারণ মনে।
সেই প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের নাম ফকির আলমগীর। দেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এবং জনপ্রিয় গণসংগীতশিল্পী তিনি। গণসংগীত করে তার মতো বিস্তৃত পরিসরে খুব কম শিল্পীই পৌঁছতে পেরেছেন। তার গান গ্রাম-বাংলার প্রতিটি প্রান্তরে, প্রতিটি মানুষের কানে বেজেছে।
স্বাধীনতার পর ফকির আলমগীর পপ ঘরানার গানে যুক্ত হন। পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে বাংলার লোকজ সুরের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি বহু গান করেছেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে।
Discussion about this post