নাঈমা ইসলাম অন্তরা
বর্তমানে অভিভাবকদের বড় দুশ্চিন্তার কারণ হচ্ছে শিশুদের মোবাইল ফোন, ট্যাব ব্যবহারের আসক্তি। সকালে ঘুম থেকে উঠে শিশুরা হাতে নিচ্ছে স্মার্টফোন। এরপর কার্টুন দেখা, গেম খেলা, এমনকি ক্ষতিকর কনটেন্টে আসক্ত হচ্ছে শিশুরা। সন্তানের প্রযুক্তি ব্যবহারের অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে মা-বাবাকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
আসক্তির লক্ষণ
- সময়মতো খেতে না চাওয়া।
- অল্পতেই রেগে যাওয়া।
- পড়ালেখা ও কাজের মান কমে যাওয়া।
- চোখের সমস্যা তৈরি হওয়া।
- ঘাড়ে ব্যথা হওয়া।
- ইন্টারনেট বা গেমের বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে আচরণ পরিবর্তিত হওয়া।
- আচরণে আগ্রাসী ভাব।
- আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি হওয়া বা অন্যকে আঘাত করার প্রবণতা।
- অতি উদ্বিগ্নতা, বিষণ্নতা ও তীব্র মানসিক চাপ দেখা দেওয়া।
করণীয়-
- শিশুর বিভিন্ন ডিভাইস দেখার সময় বেঁধে দিন। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে স্মার্টফোনসহ সব ধরনের ডিভাইস থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
- শিশু ইন্টারনেটে কী করছে, সেটি খেয়াল রাখতে হবে।
- আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
- শিশুদের প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া খুব জরুরি। শিশুকে নিয়ে বাগানে বা প্রকৃতির মধ্যে খেলাধুলা করুন।
- শিশুদের ঘরে কাজে ব্যস্ত রাখতে পারেন; বিশেষ করে মায়েরা বা শিশুর দেখাশোনা যিনি করেন, তিনি এ কাজটি করতে পারেন।
- অনলাইন বা ইন্টারনেটে শিশুরা কী কী দেখতে পারবে, সে বিষয় সম্পর্কে তাদের বোঝাতে হবে।
- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি ও ভিডিও পোস্ট করার ঝুঁকি সম্পর্কে শিশুকে সচেতন করুন।
- পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে কোথাও ভ্রমণ, বই পড়া, খেলাধুলাসহ আরও বিভিন্ন সামাজিক কাজ শুরু করুন। এতে শিশুরা আনন্দ পাবে, সামাজিকতা শিখবে এবং সহায়তা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবে।
- অভিভাবক যদি খুব বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত হন, তাহলে স্বাভাবিকভাবে সন্তানও সেটিই করবে। শিশুরা অনুকরণপ্রিয় হয়। তারা বড়দের যা করতে দেখে, নিজেরাও তাই করার চেষ্টা করে। তাই শিশুর আচরণে পরিবর্তন আনার জন্য অভিভাবক হিসেবে সবার আগে আপনার আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে।
- সন্তান যদি ডিভাইস ব্যবহারে আসক্ত হয়ে যায়, তাহলে অভিজ্ঞ সাইকো-থেরাপিস্ট, কাউন্সেলর ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
লেখক: নাঈমা ইসলাম অন্তরা,সাইকোলজিস্ট ও ট্রেইনার
Discussion about this post