থানকুনি পাতা আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর ল্যাটিন নাম centella aciatica। গ্রামাঞ্চলে থানকুনি পাতার ব্যবহার আদি আমল থেকেই চলে আসছে। ছোট্ট প্রায় গোলাকৃতি পাতার মধ্যে রয়েছে ওষুধি সব গুণ। থানকুনি পাতার রস রোগ নিরাময়ে অতুলনীয়।প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এর ভেষজ গুণ থেকে। খাদ্য উপায়ে এর সরাসরি গ্রহণ রোগ নিরাময়ে থানকুনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। অঞ্চলভেদে থানকুনি পাতাকে আদামনি, তিতুরা, টেয়া, মানকি, থানকুনি, আদাগুনগুনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি, ধূলাবেগুন, নামে ডাকা হয়। তবে বর্তমানে থানকুনি বললে সবাই চেনে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কেউ যদি নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করে, তাহলে মাথার চুল থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অংশের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন…
১. চুল পড়ার হার কমে:
নানা
সময়ে
হওয়া
বেশ
কিছু
গবেষণায় দেখা
গেছে
সপ্তাহে ২-৩ বার থানকুনি পাতা
খেলে
স্কাল্পের ভেতরে
পুষ্টির ঘাটতি
দূর
হয়।
ফলে
চুল
পড়ার
মাত্রা
কমতে
শুরু
করে।
চুল
পড়ার
হার
কমাতে
আরেকভাবেও থানকুনি পাতাকে
কাজে
লাগাতে
পারেন।
কীভাবে?
পরিমাণ
মতো
থানকুনি পাতা
নিয়ে
তা
থেঁতো
করে
নিতে
হবে।
তারপর
তার
সঙ্গে
পরিমাণ
মতো
তুলসি
পাতা
এবং
আমলা
মিশিয়ে
একটা
পেস্ট
বানিয়ে
নিতে
হবে।
সবশেষে
পেস্টটা চুলে
লাগিয়ে
নিয়ে
কিছু
সময়
অপেক্ষা করতে
হবে।
১০
মিনিট
পরে
ভাল
করে
ধুয়ে
ফেলতে
হবে
চুলটা।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহে কম
করে
২
বার
এইভাবে
চুলের
পরিচর্যা করলেই
দেখবেন
কেল্লা
ফতে!
২. টক্সিক উপাদানেরা শরীর থেকে বেরিয়ে যায়:
নানাভাবে সারা
দিন
ধরে
একাধিক
ক্ষতিকর টক্সিন
আমাদের
শরীরে,
রক্তে
প্রবেশ
করে।
এইসব
বিষেদের যদি
সময়
থাকতে
থাকতে
শরীর
থেকে
বের
করে
দেওয়া
না
যায়,
তাহলে
কিন্তু
বেজায়
বিপদ!
আর
এই
কাজটি
করে
থাকে
থানকুনি পাতা।
কীভাবে
করে?
এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে
অল্প
পরিমাণ
থানকুনি পাতার
রসের
সঙ্গে
১
চামচ
মধু
মিশিয়ে
খেলে
রক্তে
উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানগুলি বেরিয়ে
যায়।
ফলে
একাধিক
রোগ
দূরে
থাকতে
বাধ্য
হয়।
৩. ক্ষতের চিকিৎসা করে:
থানকুনি পাতা
শরীরে
উপস্থিত স্পেয়োনিনস এবং
অন্যান্য উপকারি
উপাদান
এক্ষেত্রে বিশেষ
ভূমিকা
পালন
করে
থাকে।
তাই
তো
এবার
থেকে
কোথাও
কেটে
গেলে
সঙ্গে
সঙ্গে
সেখানে
অল্প
করে
থানকুনি পাতা
বেঁটে
লাগিয়ে
দেবেন।
দেখবেন
নিমেষে
কষ্ট
কমে
যাবে।
৪. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
থানকুনি পাতা
হজম
ক্ষমতারও উন্নতি
হবে।
কারণ
একাধিক
গবেষণায় দেখা
গেছে
থানকুনি পাতায়
উপস্থিত একাধিক
উপকারি
উপাদান
হজমে
সহায়ক
অ্যাসিডের ক্ষরণ
যাতে
টিক
মতো
হয়
সেদিকে
খেয়াল
রাখে।
ফলে
বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা
চাড়া
দিয়ে
উঠতে
পারে
না।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
থানকুনি পাতায়
উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিটা
ক্যারোটিন, ফ্য়াটি
অ্যাসিড এবং
ফাইটোকেমিকাল ত্বকের
অন্দরে
পুষ্টির ঘাটতি
দূর
করার
পাশাপাশি বলিরেখা কমাতে
বিশেষ
ভূমিকা
পালন
করে
থাকে।
ফলে
স্বাভাবিকভাবেই স্কিনের ঔজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
পায়।
সেই
সঙ্গে
কম
বয়সে
ত্বকের
বুড়িয়ে যাওয়ার
সম্ভাবনাও কমে।
৬. আমাশয়ের মতো সমস্যা দূর হয়:
এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে
খালি
পেটে
নিয়ম
করে
থানকুনি পাতা
খেতে
হবে।
এমনটা
টানা
৭
দিন
যদি
করতে
পারেন,
তাহলেই
কেল্লাফতে! এই
ধরনের
সমস্যা
কমাতে
আরেকভাবেও থানকুনি পাতাকে
কাজে
লাগাতে
পারেন।
প্রথমে
পরিমাণ
মতো
থানকুনি পাতা
বেটে
নিন।
তারপর
সেই
রসের
সঙ্গে
অল্প
করে
চিনি
মেশান।
এই
মিশ্রনটি দু
চামচ
করে,
দিনে
দুবার
খেলেই
দেখবেন
কষ্ট
কমে
যাবে।
৭. পেটের রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে:
অল্প পরিমাণ আম গাছের ছালের সঙ্গে ১ টা আনারসের পাতা, হলুদের রস এবং পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা ভাল করে মিশিয়ে ভাল করে বেটে নিন। এই মিশ্রনটি নিয়মিত খেলে অল্প দিনেই যে কোনও ধরনের পেটের অসুখ সেরে যায়। সেই সঙ্গে ক্রিমির প্রকোপও কমে।
৮. কাশির প্রকোপ কমে:
২
চামচ
থানকুনি পাতার
রসের
সঙ্গে
অল্প
করে
চিনি
মিশিয়ে
খেলে
সঙ্গে
সঙ্গে
কাশি
কমে
যায়।
আর
যদি
এক
সপ্তাহ
খেতে
পারেন,
তাহলে
তো
কথাই
নেই।
সেক্ষেত্রে কাশির
কোনও
চিহ্নই
থাকবে
না।
৯. জ্বরের প্রকোপ কমে:
সিজন
চেঞ্জের সময়
যারা
প্রায়শই জ্বরের
ধাক্কায় কাবু
হয়ে
পারেন,
তাদের
তো
থানকুনি পাতা
খাওয়া
মাস্ট!
কারণ
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উল্লেখ
রয়েছে
যে
জ্বরের
সময়
১
চামচ
থানকুনি এবং
১
চামচ
শিউলি
পাতার
রস
মিশিয়ে
সকালে
খালি
পেটে
খেলে
অল্প
সময়েই
জ্বর
সেরা
যায়।
সেই
সঙ্গে
শারীরিক দুর্বলতাও কমে।
১০. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়:
অসময়ে
খাওয়ার
কারণে
ফেঁসেছেন গ্যাস্ট্রিকের জালে?
নো
প্রবেলম! থানকুনি পাতা
কিনে
আনুন
বাজার
থেকে।
তাহলেই
দেখবেন
সমস্যা
একেবারে হাতের
মধ্যে
চলে
আসবে।
আসলে
এক্ষেত্রে একটা
ঘরোয়া
চিকিৎসা দারুন
কাজে
আসে।
কী
সেই
চিকিৎসা? হাফ
লিটার
দুধে
২৫০
গ্রাম
মিশ্রি
এবং
অল্প
পরিমাণে থানকুনি পাতার
রস
মিশিয়ে
একটা
মিশ্রন
তৈরি
করে
ফেলুন।
তারপর
সেই
মিশ্রন
থেকে
অল্প
অল্প
করে
নিয়ে
প্রতিদিন সকালে
খাওয়া
শুরু
করুন।
এমনটা
এক
সপ্তাহ
করলেই
দেখবেন
উপকার
মিলবে।
Discussion about this post