বিনোদনডেস্ক
আফসানা মিমি। অভিনেত্রী ও নির্মাতা। বিটিভিতে প্রতিদিন রাত সাড়ে ৮টায় পুনঃপ্রচার হচ্ছে তার অভিনীত ধারাবাহিক ‘কোথাও কেউ নেই’। এ ধারাবাহিক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তার সঙ্গে-
কেমন আছেন? বাসায় সময় কাটাচ্ছেন কী করে?
এই তো চলে যাচ্ছে। ঘরবন্দি থাকার এ যুদ্ধটা আমার কাছে সহজ মনে হয়। এ সময়ে অনেক কিছু করার আছে। জীবনে চলার পথে অনেক জঞ্জাল জমে যায়। এখন এটি পরিস্কার করার উপযুক্ত সময়। লকডাউনের আগে যে কাজ গৃহকর্মী করতো তা এখন নিজে করছি। নতুন করে নিজেকে জানার সুযোগ হয়েছে। বাবাকে সময় দিচ্ছি। টিভি দেখছি। ফাঁকে ফাঁকে গানও শুনছি। বাড়িতে যত ছবির অ্যালবাম রয়েছে সেগুলো গোছাচ্ছি। এটি করতে গিয়ে মায়ের পুরোনো অনেক চিঠি খুঁজে পেয়েছি।
বিটিভিতে আবার ‘কোথাও কেউ নেই’ প্রচার শুরু হয়েছে…দেখেছেন নিশ্চয়ই?
হ্যাঁ। প্রতিদিনই দেখেছি। হুমায়ূন আহমেদের লেখা এটি চমৎকার একটি নাটক। নাটকটি আবারও দেখার সময় সেই সময়ের স্মৃতিগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। আমার অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে নাটকটিতে অভিনয় করেছি। ওই নাটকের মাধ্যমে আমরা যে পারিবারিক বন্ধন অর্জন করেছি, সেটি এখনও আছে। এখনও সুবর্ণা আপা আমার বড় আপা, শিলা ছোট বোন। নাটকে বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গুণী অভিনেতা মোজাম্মেল হোসেন। তাকে আমরা বাবাই ডাকতাম। তিনি অনেক আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। এখনও তার কথা মনে হলে কষ্ট পাই। বরেণ্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি, সালেহ আহমেদ, অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ারসহ অনেকের কথা খুব মনে পড়ে।
শুটিংয়ের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে…
হ্যাঁ। প্রতিটি দৃশ্যই আমার মনে এখনও জীবন্ত। আজও এর একটি দৃশ্যের কথা মনে হলে হাসি পায়। নাটকটিতে আমি অভিনয় করেছি বকুল চরিত্রে। সে এক ডাক্তারের প্রেমে পড়ে। একদিন ডাক্তার সাহেব বাসায় এলে তাকে চা দেওয়া হয়। সেই চায়ের মধ্যে তেলাপোকা পাওয়া যায়। শুটিংয়ের দিন হুমায়ূন ভাই [হুমায়ূন আহমেদ] আমাকে বলেন মেয়েরা তেলাপোকা ভয় পায়, তুমি তোলাপোকা দেখামাত্র জোরে চিৎকার দেবে। আমি বললাম, তেলাপোকা ভয় পাই না। এটা শুনে হুমায়ূন ভাই ভীষণ অবাক। কারণ তিনি চেয়েছিলেন তেলাপোকা দেখে আমি হুলস্থূল করি। যাই হোক অনেকদিন পর বিটিভি তাদের পুরোনো নাটকগুলো দর্শকদের দেখাচ্ছে। লকডাউনের এই সময়ে দর্শকরা বেশ উপভোগ করছে নাটকগুলো।
কিছুদিন আগে ‘রুম নাম্বার ৪০৪’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মাণ করেছেন। এটি কবে আসছে?
কাজ প্রায় শেষ। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সব পাল্টে গেছে। লকডাউন শেষ হলে মুক্তির তারিখ চূড়ান্ত করতে পারব।
আপনি তো গিয়াসউদ্দিন সেলিমের পাপ-পূর্ণ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কেমন হয়েছে?
পুরো ছবিটি কেমন হয়েছে, তা নির্মাতাই ভালো বলতে পারবেন। তবে যখন ছবিটির গল্প শুনেছি, তখনই বেশ ভালো লাগায় এতে অভিনয়ে রাজি হয়েছি। এই ছবিতে আমাকে দেখা যাবে পারুল চরিত্রে। এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। তার সঙ্গে এবারই প্রথম কাজ করলাম।
অভিনয়ে আপনি অনিয়মিত। অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে দর্শক মিস করছেন…
এটা সত্যি পরিচালনার ব্যস্ততায় দর্শকদের কাছ থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছি। অভিনয়ের জন্য অনেক সময় বের করতে হয়, যা এখন আমার পক্ষে সম্ভব নয়। অভিনয় যে একেবারে করছি না, তা কিন্তু নয়। জুতসই চরিত্র ও গল্প পেলে মাঝে মাঝে দর্শকের সমানে হাজির হওয়ার চেষ্টা করি।
Discussion about this post