প্রতিটি শিক্ষার্থীরই পরীক্ষার খাতায় সমৃদ্ধ উত্তর ও স্পষ্ট হাতের লেখা ছাড়াও আরও কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। উত্তরপত্রটি কেমন হলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে তা নির্ভর করে কিছু বৈশিষ্ট্যের ওপর।
১. OMR এর তথ্য পূরণ
প্রথম পৃষ্ঠাটির নাম হলো OMR। এর তিনটি অংশ থাকে। OMR এর ১ম অংশের তথ্যগুলো পূরণ করা একজন পরীক্ষার্থীর প্রথম কাজ। পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন, বিষয় কোড, বোর্ড, শাখা প্রভৃতি তথ্য সম্বলিত বৃত্তগুলো ভরাট করতে হবে। মনে রাখবে এসবের কোন একটি ভুল হলে তোমার রেজাল্ট স্থগিত হবে। কালো বল পেন বৃত্তগুলো এমনভাবে ভরাট করবে যেন ভেতরের চিহ্ন দেখা না যায়। আবার অপর পৃষ্ঠায় কোন দাগ না পড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। লিথোকোডে কোন দাগ দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে কোন ভুলত্রুটি বা সন্দেহ হলে সাথে সাথে পরিদর্শককে অবগত করবে।
২. পৃষ্ঠায় ক্রমিক নং বসানো
খাতার প্রতি পৃষ্ঠায় এক কোনায় পৃষ্ঠা নং বসাবে। প্রশ্নপত্র দেয়ার পূর্বেই একাজটি করতে হবে। অতিরিক্ত উত্তরপত্র নেয়ার সময় অবশ্য নম্বর বসানোর সময় পাবে না। তখন শুধুমাত্র প্রথম পৃষ্ঠায় নং বসাতে পার। যেমন-প্রথমটিতে ১, দ্বিতীয়টিতে ২, এভাবে ক্রমিক নম্বর দিবে। এতে করে পরীক্ষা শেষে খাতা সেলাই করতে সুবিধা হয়।
৩. মার্জিন করা
খাতার বামদিকে এক ইঞ্চি কাগজবাদ দিয়ে মার্জিন করবে। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পূর্বেই একাজটি সেরে নিবে। এ অংশটি পরীক্ষকের জন্য বরাদ্দ। এখানে পরীক্ষক উত্তর মূল্যায়নপূর্বক নম্বর দিয়ে থাকেন। পরীক্ষার মাঝখানে অতিরিক্ত উত্তরপত্র নেবার পর সময়ের স্বল্পতার জন্য মার্জিন করা সম্ভব না হলেও ভাংতি দিয়ে হলেও বামের এক ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা রাখবে। প্রতিটি পৃষ্ঠার ডানদিকেও লেখার সময় ১/২ ইঞ্চি জায়গা খালি রাখবে।
৪. প্রশ্নের ক্রমিক নং লেখা
প্রতিটি উত্তর লিখতে গিয়ে প্রশ্নের ক্রমিক নম্বর দিতে ভুল করবে না। অনেকে অসাবধানতাবশত ৩নং এর স্থলে ৭নং, আবার ৪নং স্থলে ১ নং ভুলে লিখে থাকে। এ ধরনের ভুল করলে নম্বর কাটারও বিধান রয়েছে। তবে পরীক্ষক মানবিক কারণে প্রশ্নের নং সংশোধন করে খাতা মূল্যায়ন করে থাকেন। তাই ঠাণ্ডা মাথায় প্রশ্নোত্তরের সঠিক ক্রমিক নম্বর লিখবে।
৫. ঠিকানা বা মন্তব্য না লেখা
পরীক্ষার খাতায় অনেকে পরীক্ষার্থী নিজের ঠিকানা বা কোন মন্তব্য লিখে থাকে। বাংলা বা ইংরেজি ২য় পত্রের পরীক্ষায় এ কাজটি বেশি হয়। দরখাস্ত বা চিঠি লিখতে গিয়ে ছেলেমেয়েরা এ কাজটি করে থাকে। অনেকে আবার ‘স্যার, আমাকে দয়া করে পাস নম্বর দিয়ে দিবেন’ বলে মন্তব্য জুড়ে দেন। এসবই বেআইনী। এজন্য খাতাটি বহিষ্কার পর্যন্ত হতে পারে। কাজেই এ ধরনের ভুল কখনো করবে না।
৬. খাতায় খালি পৃষ্ঠা না রাখা
কোন কোন ছাত্রছাত্রী ভুলে বা পরে অমুক উত্তরের জন্য জায়গা রেখে অপর পৃষ্ঠায় চলে যায়। হয়তো যখন চোখে পড়ে তখন পরীক্ষা শেষের দিকে। এ অবস্থায় করণীয় হলো খালি পৃষ্ঠায় ক্রসচিহ্ন দেয়া অথবা ঐ পৃষ্ঠায় কক্ষের পরিদর্শকের স্বাক্ষর নেয়া। কেননা লেখার মাঝখানে পৃষ্ঠা খালি থাকলে পরীক্ষকের মনে সন্দেহ জন্ম নেয়।
৭. উত্তর পড়ার উপযুক্ত হওয়া
পরীক্ষার খাতায় যত ভালো নোটই লেখ না কেন, তা যদিপড়া বা বোঝা না যায় তখন পরীক্ষক খাতা মূল্যায়নে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এজন্যই উত্তর যতটুকুই লিখবে তা যেন স্পষ্টভাবে পড়া যায়। অন্যদিকে প্রশ্ন কমন না পড়লে অনেকেই বানিয়ে উত্তর দেন। কেউ কেউ এমন সব উদ্ভব কথাবার্তা লিখে থাকে। যার সাথে প্রশ্নের কোন মিলই থাকে না। তাই সবদিক থেকে উত্তর পড়ার উপযোগী ও প্রশ্নের সাথে সামঞ্জস্য হলেই পরীক্ষার নম্বর দিয়ে থাকেন।
৮. সময়ের সাথে উত্তরের সঙ্গতি বিধান:
উত্তর লেখার সাথে সময়ের সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে। এজন্য আগে থেকেই প্রতিটি প্রশ্নোত্তরের জন্য কতটুকু সময় পাবে তা নির্ধারণ করতে হবে এবং সেইভাবে পরীক্ষার জন্য নিজের প্রস্তুতি নিতে হবে। কেউ যদি কোন উত্তর এর চেয়ে বেশি সময় নিয়ে লিখে, তাহলে তার পক্ষে সবগুলো প্রশ্নোত্তর লেখা সম্ভব হবে না। তাই এ ব্যাপারে পূর্ব পরিকল্পনা অত্যাবশ্যক।
৯. সুন্দর উপস্থাপনা
প্রতিটি প্রশ্নোত্তরের উপস্থাপনা বা স্টাইল হতে হবে আকর্ষনীয়। বিশেষ করে ভূমিকায় থাকতে হবে বৈচিত্র্যতা। উত্তরের মৌলিক অংশকে ভিতরে রেখে উপস্থাপনা যত বেশি ভালো করা যাবে তত বেশি নম্বর পাওয়া যাবে। উপসংহারও হতে হবে ব্যতিক্রমধর্মী। তবে উত্তরের মধ্যে নিজস্ব কোন ধরণ উপস্থাপন করতে পারলে আরও ভালো হয়। উল্লেখ্য, ভূমিকা ও উপসংহার শব্দ দুটি না লিখে শুধু উত্তরের শুরু ও শেষ কথার বক্তব্য লেখাই
Discussion about this post