ছাত্র জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো পড়াশোনা করে পরীক্ষায় ভালো ফল করা। কিন্তু কিভাবে পড়লে পরীক্ষায় ভালো ফল করা যায় তা অধিকাংশ ছেলে-মেয়ের অজানাই থেকে যায়। ভালো ফল করার জন্য প্রখর মস্তিষ্কের সাথে সাথে পরিশ্রম নাকি বুদ্ধিদীপ্ত পড়াশোনা করা প্রয়োজন ?
তাই আজকে আমরা “How We Learn ” বই থেকে জানব -বুদ্ধিদীপ্ত পড়াশুনা(কম পড়ে ভালো রেজাল্ট ) করার ৪ টি কার্যকারী পদ্ধতি।
১.একটানা না পড়ে কিছু সময় অন্তর বিরতি নিন
একটি চারা গাছের বেড়ে ওঠার জন্য সপ্তাহে শুধু একদিন দেড় ঘন্টা জল দেওয়ার থেকে প্রতিদিন 5 মিনিট জল দেওয়াটা অনেকটা কার্যকরী হয়। অনুরূপভাবে একটানা 3 ঘণ্টা পড়ার থেকে সেটাকে তিনটি ভাগে ভাগ করে 1 ঘন্টা করে পড়াটা বেশি ফলপ্রসূ।
বিজ্ঞান এটা প্রমাণ করেছে যে Distributed Learning আমাদের স্মৃতি শক্তি ৪৬% বৃদ্ধি করতে পারে। এর অনেক কারণ আছে , আমরা যখনই কোন সিনেমা বা ভিডিও দেখি তখন মাঝখানের দৃশ্যগুলি তুলনায় প্রথম এবং শেষের দিকের দৃশ্য গুলি বেশি ভালোভাবে মনে থাকে।
এজন্য কাজের সময় যত ছোট হবে ততোই ভালো। আমরা কোন জিনিস যত বেশি ভুলেযায় আর পরিশ্রম করে মনে করার চেষ্টা করি সেই জিনিসটি আমাদের মস্তিষ্কে তত বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
২.একবার পড়ে সেটা তিনবার না দেখে বলার চেষ্টা করুন
অনেক সময় আমাদের মনে হয় “হ্যাঁ বুঝে গেছি ” আর তা বাদ দিয়ে অন্য কিছু পড়তে শুরু করি। কিন্তু পরীক্ষার সময় তা আর মনে করতে পারি না। এটাকে ইংরেজিতে ” Fluency Illusion ” বলা হয় ,যখন জিনিষটা চোখের সামনে থাকে তখন ব্রেনে একটা ইল্যুশন তৈরী হয় যে ” হ্যাঁ মুখস্থ হয়ে গেছে ” আসলে তা হয়নি। এজন্য চারবার দেখে দেখে পড়ার থেকে একবার পড়ে সেটা না দেখে তিন বার বলার চেষ্টা করাটা বেশি কার্যকরী হয়।
৩.নিজে পড়ে অন্যদের শেখান
আমরা অনেক কিছু পড়ি কিন্তু বেশিরভাগ ভুলে যায়। কিছু পড়লে তখনই নিজেকে নিজে পরীক্ষা নিতে হবে। তার জন্য যা পড়লেন সেটা অন্যদের পড়ান।পড়ানোটা এক ধরনের পড়াশোনা করার পদ্ধতি। বিভিন্ন অধ্যায় থেকে নানা সমস্যা তৈরি করে সেটা সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। সেই অধ্যায়টি আপনি যখন অন্যদের ভালোভাবে বোঝাতে পারবেন তখন আপনি নিশ্চিত হতে পারেন অধ্যায়টি সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করেছেন।
৪.পড়ার পর কিছু সময় ঘুমোনো ভালো
যখন আমরা ঘুমায় তখন ঘুমের মধ্যে জরুরী তথ্যগুলি আমাদের অবচেতন মনে আমাদের মস্তিষ্কে জমা হয় । তাই একটা ঘুম দেয়ার পর আমরা নিজেদের ফ্রেশ অনুভব করি। বিজ্ঞানীদের মতে ঘুমোনোর প্রকৃত সময় রাত ১১ টা থেকে সকাল ৬ অবধি। রাত্রে ৬ ঘন্টা ঘুমানো আবশ্যিক। যখন আপনার মস্তিস্ক ফ্রেশ এনার্জেটিক থাকে সেই সময়টি পড়ার উপযুক্ত সময়। তাই পরেরদিন ইতিহাস ,বাংলার মতো বিষয়ের পরীক্ষা থাকলে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়াটা বেশি ভালো , তথ্য গুলো অবচেতন মন থেকে থেকে মস্তিষ্কে প্রসেসিং হওয়ার সময় পায়।
Discussion about this post