নিজস্ব প্রতিবেদক
তিন দফা দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বেলা ১২ টায় রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে বন্ধ থাকে সবধরণের যান চলাচল।
We want promotion, তিন দফা তিন দাবী , মানতে হবে মানতে হবে, ফলাফলে ধস কেন, প্রশাসন জবাব চাই ইত্যাদি শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজপথ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনর সময় সরকারী নির্দে শনা মেনে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে অনলাইন ক্লাস চালু ছিলো। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে পরীক্ষাও নিয়েছে। কিন্তু করোনার এই দুই বছরে সাত কলেজে কোন অনলাইন ক্লাস হয়নি, হয়নি কোন পরীক্ষা। উপরন্তু করোনার পর হঠাৎ নেয়া ৮০ নম্বরের পরীক্ষায় মাত্র ২ ঘন্টা সময় দেয়া হয় , আগে যেটি নেয়া হতো ৪ ঘন্টায়। তাছাড়া করোনা আক্রান্ত থাকার কারণে অনেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও করতেও পারেনি। অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিয়েছে। করোনার অজুহাতে এই হঠকরী সিদ্ধান্তের ফলে আজ এই ফলাফল বিপর্যয়।
আবার দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আরও মারাত্মক। অন্য সব বিভাগের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা হয় ৮০ নম্বরে এবং ইনকোর্স পরীক্ষার ২০ নম্বর থাকে কলেজের হাতে।কিন্তু দর্শন বিভাগের পুরো ১০০ নম্বরের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা দিতে হয়, যা ফলাফল খারাপ করার অন্যতম কারণ বলে বিবেচনা করছে শিক্ষার্থরা। তাই মান বন্টন পরিবর্তনের দাবিটি এসেছে।
করােনা সংক্রমণ থাকায় সাত কলেজের দর্শন বিভাগের ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। তাই মানবিক বিবেচনায় ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষ (১৭-১৮,১৮-১৯,১৯-২০) সেশনের পরীক্ষায় অকৃতকার্য সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বর্ষে প্রমােশন চাই। তারা বলেন, করােনা সংক্রমনের কারণে আমরা একই বর্ষে দুই বছর অতিক্রম করে ফেলেছি। যেখানে ৪ বছরে অনার্স শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এই সংক্রমণ এবং নতুন পরীক্ষা সিস্টেমের কারণে যদি শিক্ষার্থীদের আরাে একটি বছর চলে যায় তবে আমাদের অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কারণে সিজিপিএ শিথিল করা হয়েছে। এবার করোনাকালীন সময় বিবেচনা করে শেষবারের মতো প্রয়োজনে লিখিত নিয়ে মানবিক বিবেচনায় ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষের সব বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদেরকে পড়ার টেবিলে বসার সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে, এখানেই আমাদের শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হবে।’
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ ও সাত কলেজের নানা সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনে লিখিত আকারে ডকুমেন্ট রেখে শেষবারের মতো ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষের সব বিভাগের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদেরকে মানবিক দৃষ্টিতে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দিয়ে পড়ার টেবিলে বসার সুযোগ দিন, এটাই আমাদের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি।’
এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো-
১। করােনা সংক্রমনের কারণে ২০১৭-১৮, ১৮-১৯, ১৯-২০ সেশনের সকল বিভাগের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রমােশন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে পরীক্ষার সুযােগ দিতে হবে।
২) দর্শন বিভাগের প্রশ্নের মানবণ্টন পরিবর্তন করতে হবে, ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৮০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে এবং ২০ নম্বর ইনকোর্স এর মাধ্যমে যোগ করতে হবে।
৩। গণহারে ফেল করার কারণ ও প্রতিরােধে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
কোন প্রকার আশ্বাস না পেলে এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৬ মার্চ একই দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
Discussion about this post