শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ভর্তির অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে। চলবে আগামী ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত। চলুন জেনে নেওয়া যাক বুয়েটে ভর্তির আবেদনের খুঁটিনাটি তথ্য।
কারা আবেদন করতে পারবেন
১) যেসব প্রার্থী ২০১৭ বা ২০১৮ সালে মাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় এবং ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
২) যেসব প্রার্থী ২০১৭ সালে মাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় এবং ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষায় তাদের সংশোধিত ফল ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বরের পরে শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
৩) ২০১৬ সালের নভেম্বরে বা তার পরে জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল পেয়েছেন তারা আবেদন করতে পারবেন।
৪) যেসকল শিক্ষার্থী ইতিপূর্বে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তারা এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।
আবেদনের যোগ্যতা
১) প্রার্থীকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে (গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নসহ) জিপিএ-৫ স্কেলে জিপিএ-৪.০০ পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করতে হবে। তাছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন এই তিন বিষয়ে রেজিস্ট্রশনসহ গ্রেড পদ্ধতিতে ৫.০০ এর স্কেলে কমপক্ষে জিপিএ-৫.০০ এবং মাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন এই তিন বিষয়ে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ২৭০ নম্বর পেয়ে পাশ করতে হবে।
২) যেসব প্রার্থী ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষায় তাদের সংশোধিত ফল ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বরের পরে শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রকাশিত হয়েছে সেক্ষেত্রে তাদেরকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে গণিত, পদার্থ বিজন, ও রসায়ন এই তিনটি বিষয়ে ৬০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪৮০ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করতে হবে।
আবেদন শুরু ও শেষের সময়
আবেদন শুরু ১৫ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে বুয়েটের স্নাতক ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু হবে। চলবে ২৪ এপ্রিল বেলা ৩টা পর্যন্ত।
আবেদন ফি
‘ক’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ) আবেদন, প্রাক-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি বাবদ ১ হাজার এবং ‘খ’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ ও স্থাপত্য বিভাগে) ১ হাজার ২০০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময়
এবার দুই ধাপে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা (প্রাথমিক বাছাই) নেয়া হবে আগামী ৩১ মে ও ১ জুন। এর ভেতর থেকে মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের নাম ৫ জুন প্রকাশ করা হবে। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে ১০ জুন চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। এরপর আগামী ১ জুলাই নির্বাচিত ও অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এরমধ্যে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন ২৪ হাজার শিক্ষার্থী। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা থেকে বাছায় করা ৬ হাজার শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
আবেদনের প্রক্রিয়া
বুয়েটে আবেদনে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা http://ugadmission.buet.ac.bd অথবা https://www.buet.ac.bd -এ প্রবেশ করে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক নম্বর বণ্টন
ভর্তি পরীক্ষা ‘ক’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ) এবং ‘খ’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ ও স্থাপত্য বিভাগ) অনুষ্ঠিত হবে।
উভয় গ্রুপে চার শিফটে মোট ১০০ নম্বরের ঘন্টাব্যাপী প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় গণিতে ৩৪, পদার্থবিজ্ঞানে ৩৩ এবং রসায়নে ৩৩ সহ মোট ১০০ নম্বর থাকবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে।
প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবে। চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ গ্রুপে ৪০০ নম্বরের এবং ‘খ’ গ্রুপে ৬৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে উভয় গ্রুপে গণিতে ১৪টি, পদার্থবিজ্ঞানে ১৩ এবং রসায়নে ১৩টি করে মোট ৪০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রতি প্রশ্নের মান ১০। সময় ২ ঘণ্টা। এছাড়া ‘খ’ গ্রুপে মুক্তহস্ত অংকন বিষয়ে ৩টি প্রশ্ন (প্রতি প্রশ্নের মান ৭০) এবং দৃষ্টিগত ও স্থানিক ধীশক্তি বিষয়ে ৪টি প্রশ্ন (প্রতি প্রশ্নের মান ১০) থাকবে। এর জন্য সময় ৯০ মিনিট।
চূড়ান্ত ফলাফল
চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিকে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে।
আসন সংখ্যা
চলতি শিক্ষাবর্ষে মোট এক হাজার ২১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি নিবে বুয়েটে। এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থীদের প্রকৌশল বিভাগ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট তিনটি এবং স্থাপত্য বিভাগে ১টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে।
বুয়েটে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
বুয়েটে ভর্তির নির্দেশিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন
Discussion about this post