শিক্ষার আলো ডেস্ক
একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সাধারণত রাসায়নিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার নকশা ও তত্ত্বাবধায়নের কাজ করে থাকেন। খাদ্য, ঔষধ, চামড়া বা জ্বালানি কারখানার রাসায়নিক উৎপাদন ব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান তার মাধ্যমে হয়ে থাকে। শিল্পায়নের এ যুগে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করার ভালো সুযোগ রয়েছে আপনার।
এক নজরে একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
সাধারণ পদবী: কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
বিভাগ: ইঞ্জিনিয়ারিং
প্রতিষ্ঠানের ধরন: কোম্পানি
পেশার ধরন: ফুল-টাইম
লেভেল: এন্ট্রি, মিড
এন্ট্রি লেভেলে অভিজ্ঞতা সীমা: ০ – ২ বছর
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন সীমা: ৳২০,০০০ – কাজ, প্রতিষ্ঠান ও অভিজ্ঞতাসাপেক্ষ
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স সীমা: ২৪ বছর – কাজ ও প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ
মূল স্কিল: রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে কাজ করার দক্ষতা, কন্ট্রোল সিস্টেম পরিচালনার দক্ষতা, প্রসেস ডেভেলপমেন্টের দক্ষতা
বিশেষ স্কিল: প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা, ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা
একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কোথায় কাজ করেন?
সব ধরনের কারখানাতেই কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে থাকেন। তবে নিচের শিল্পগুলোতে কাজের সুযোগ সবচেয়ে বেশি:
- টেক্সটাইল
- ঔষধ
- চামড়া প্রক্রিয়াকরণ
- সিমেন্ট
- গ্লাস বা সিরামিক
- ফুড ও বেভারেজ
- চা
- চিনি
- কাগজ
- সার
- পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস
- কসমেটিক্স
একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ কী?
- কাঁচামালের গুণগত ও রাসায়নিক পরিবর্তন করা
- কেমিক্যাল প্ল্যান্টের নকশা করা
- কেমিক্যাল প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া
- কেমিক্যাল কম্পোজিশনের অনুপাত নির্ধারণ করা
- প্রসেস ডেভেলপমেন্ট করা
- রাসায়নিক পরীক্ষা চালানোর জন্য মডেল তৈরি করা
- কেমিক্যাল প্ল্যান্ট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া
কারখানার জনবলকে পরিচালনা করা আর কাঁচামাল কেনা ও সংরক্ষণ তদারকি করার কাজও করতে হবে আপনাকে।
একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ প্রায় সময় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়। তবে ডিপ্লোমা কোর্স করার পরও বিভিন্ন কারখানায় কাজের সুযোগ পাবেন।
বয়সঃ প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষে বয়সের সীমা থাকে। সাধারণত ২৪-৩০ বছর হতে হবে আপনাকে।
অভিজ্ঞতাঃ এ পেশায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেয়া হয়। সাধারণত শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১-২ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে আসে।
একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
প্রজেক্টের উপর টেকনিক্যাল জ্ঞানের ধরন নির্ভর করে। এরপরও সাধারণ উদাহরণ হিসাবে নিচের স্কিলগুলোর কথা বলা যায় –
- সর্বোচ্চ উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহারের দক্ষতা
- কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি জানা
- ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা
নন-টেকনিক্যাল জ্ঞানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –
- সৃজনশীল উপায়ে ও যৌক্তিকভাবে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
- বিশ্লেষণী ক্ষমতা, যা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে সাহায্য করতে পারে
- অন্যদের সাথে কাজ করার মানসিকতা থাকা
- বিভিন্ন ধরনের কাজ একসাথে সামলানোর দক্ষতা
- নিয়মিত প্রজেক্ট সাইট বা কেমিক্যাল প্ল্যান্ট পরিদর্শনে যাবার মানসিকতা থাকা
কোথায় পড়বেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং?
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি নিতে পারেন।
- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (BUET)
- যশোর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি (JSTU)
- শাহজালাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (SUST)
- নোয়াখালী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি (NSTU)
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় কেমন?
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আপনি মাসিক ২০,০০০ টাকা থেকে এন্ট্রি লেভেলের চাকরি পেতে পারেন। প্রশিক্ষণ, কাজের অভিজ্ঞতা ও প্রতিষ্ঠান ভেদে আয় ভিন্ন হয়। তাছাড়া পদোন্নতি সাপেক্ষে মাসে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা সম্ভব।
ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের?
চাহিদা অনুযায়ী কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া যায়না বলে এ পেশার চাহিদা বেড়েই চলেছে। সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও বিভিন্ন শিল্প কারখানায় অভিজ্ঞতা ও কারিগরি দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ম্যানেজার পদে উন্নীত হবার সুযোগ রয়েছে আপনার। পাশাপাশি অনেকে পরামর্শক বা কনসালট্যান্ট হিসাবে কাজ করেন। কেউ কেউ উদ্যোক্তা হয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে ভালো উপার্জন করছেন।
Discussion about this post