জুবায়ের আহম্মেদ
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার এমসিকিউ পার্টের তিনটি অংশের মধ্যে একটি হলো ইংরেজি। এই অংশে সাধারণত Grammar, Vocabulary ও Reading Comprehension-এর ওপরই প্রশ্ন আসে এবং সচরাচর ৩০টি প্রশ্ন থাকে এই সেকশনে। আইবিএর ইংরেজি অংশটি প্রতিবছরই বেশ কঠিন করা হয় এবং ধারাবাহিকভাবেই এর প্রশ্নগুলো একটু জটিল হয়ে থাকে। অতএব ইংলিশ পার্টের প্রিপারেশন ভালোমতো নিতে হবে, যাতে সব টপিকের ব্যাপারেই ভালো ধারণা থাকে এবং পাস মার্ক ওঠাতে কোনো সমস্যা না হয়।
গ্রামারের জন্য প্রথমেই যেটা করতে হবে তা হলো Cliffs TOEFL বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোমতো পড়ে শেষ করে ফেলতে হবে। খুঁটিনাটি গ্রামাটিক্যাল রুলস খুব ভালোভাবে শিখে নিজের বেসিককে শক্ত করতে হবে। এ বইটির প্রতিটি অনুশীলনী বারবার চর্চা করাও খুব জরুরি। এরপর Barron’s SAT থেকে Sentence Correction and Error Detection অংশগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করতে হবে। তবে গ্রামার প্র্যাকটিস করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সলভ করা। এতে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পাশাপাশি আরও দ্রুত সলভ করতে পারা যায়। নির্দিষ্ট কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক, যেমন Parallel Structure, Dangling Modifer, Conditional এগুলোর প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে, যেহেতু এখান থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। গ্রামারের প্রতিটি টপিক এমনভাবে প্র্যাকটিস করে ফেলতে হবে যাতে প্রশ্ন দেখেই বোঝা যায় সেটার উত্তর কী।
Reading Comprehension-এর ক্ষেত্রে একটা পেসেজ দেওয়া হয়ে থাকে, এবং এর ওপরই কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়ে থাকে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর করার জন্য দরকার হয় Critical Thinking ও Vocabulary-এর ওপর দক্ষতা। Reading Comprehension পার্টটি সময় গ্রাসকারী হতে থাকে, তাই উত্তর করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে এর পেছনে খুব বেশি সময় যাতে ব্যয় না হয়। লম্বা পেসেজ দ্রুত পড়ার অভ্যাস করতে হবে। তবে সময়ের ঘাটতি থাকলে Reading Comprehension-এর প্রশ্নগুলো এড়ানোর পরামর্শই থাকবে। এতে করে অন্য প্রশ্নগুলোর জন্য আরও বেশি সময় পাওয়া যায়। Reading Comprehension প্র্যাকটিস করার জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করা যেতে পারে, তা ছাড়া ইন্টারনেটেও এই টপিকের অনেক রিসোর্স পাওয়া যাবে।
Vocabulary আরেকটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেকশন আইবিএ অ্যাডমিশন পরীক্ষায়। এ ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হবে শব্দের অর্থগুলো মুখস্থ না করে বুঝে বুঝে পড়া। বাস্তব জীবনের উদাহরণ ব্যবহার করে শব্দগুলো দিয়ে বাক্য বানাতে চেষ্টা করা। যে নতুন শব্দগুলো শেখা হচ্ছে, সেগুলো দৈনন্দিন জীবনের কথোপকথনে প্রয়োগ করতে পারলেও ভালো হবে। তবে খুব বেশি শব্দ মুখস্থ করার প্রয়োজন নেই, এমন ভাবে পড়তে হবে যাতে নিয়মিত রিভাইস করা যায়।
Vocabulary শেখার জন্য Word Smart বইটি বেশ কার্যকর। এ বইয়ে থাকা ১ হাজার ৫০০টি শব্দ শিখতে পারলে Vocabulary লিস্ট অনেক সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। তবে হাতে যদি সময় না থাকে, বইয়ের পেছনে Hit Parade List-গুলো শেষ করে ফেলাই হবে বুদ্ধিমান সিদ্বান্ত।
এমসিকিউ পার্ট শেষ হওয়ার পর ৩০ মিনিটের একটি Written Test দিতে হয়। এই অংশটির সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্যও দরকার হয় ইংরেজির ওপর দক্ষতা। Written Test-এ সাধারণত Essay, Argumentative Writing, Letter/Application, Story-writing, এবং Dialogue-এর ওপরই প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো: বানান ও গ্রামারের ভুল যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা, বিভিন্ন Vocabulary ব্যবহার করা, ছোট ও গোছানো বাক্যে লেখা, অপ্রয়োজনীয় শব্দ এড়ানো এবং বিভিন্ন sentence structure ব্যবহার করে লেখা, যাতে লেখাটি আরও ইন্টারেস্টিং হয়ে ওঠে। নিয়মিত লেখার অভ্যাস তৈরি করতে হবে যাতে নিজের স্কিল বাড়ে এবং এতে লেখার দ্রুততাও বাড়বে। শেষ পরামর্শ হলো কখনো হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমেই জয়ী হওয়া যাবে এই ভর্তিযুদ্ধে।
আদিব আহমেদ খান, ২০১৮-১৯ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-বিবিএ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী।
Discussion about this post