আবু ফারুক
মাসিক সমন্বয় সভা, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতায় প্রধানশিক্ষককে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকতে হয়। আর তখন রুটিনে থাকা তাঁর ক্লাসগুলো স্বভাবতই সহকারী শিক্ষকগণ পরিচালনা করেন। যদিও তাঁরা নিজেদের নির্ধারিত ক্লাস নিয়েই খুব ব্যস্ত এবং ক্লান্ত। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও পরিকল্পনাসহ শ্রেণি পাঠদানের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজার রকমের কাজ করতে হয়। ভর্তি রেজিস্টার, বই বিতরণ, প্রতি মাসে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভা, অভিভাবক সমাবেশ, মা সমাবেশ, উপবৃত্তির হরেক কাজ, খুদে ডাক্তার কার্যক্রম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাসহ নানাবিধ কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় প্রধানসহ সকল শিক্ষককে। এসব কাজের ব্যস্ততা ও চাপে মানসম্মত ও প্রত্যাশিত পাঠদান অনেকটাই দুঃসাধ্য হয়ে যায়। আর বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রশিক্ষণের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট ঘোচাতে দিশেহারা হয়ে যান বর্তমান শিক্ষকগণ। ফলে কালেভদ্রে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরীকে দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের হট্টগোল নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রাখাকে সংবাদপত্রে ‘দপ্তরিকে দিয়ে পাঠদান’ শিরোনামে প্রতিবেদনে শিক্ষকদের গাফিলতি ও অদক্ষতা বলে চালানো হয়। অথচ প্রধানশিক্ষককে যাবতীয় লেখালিখির কাজে সহায়তার জন্য একজন অফিস সহায়ক নিয়োগ করলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ যেমন অকারণ কাজের চাপ থেকে রেহান পান, তেমনি তাঁরা শ্রেণি পাঠদানে হতে পারেন শতভাগ স্বতঃস্ফূর্ত। এতে একইসঙ্গে সৃষ্টি হবে ৬৬ হাজারেরও বেশি নতুন কর্মসংস্থান। অথচ তার বদলে সহকারী প্রধানশিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে তাতে পদোন্নতির ব্যবস্থা করলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও মানের ঠিক কেমন উন্নতি হবে তা বোধগম্য নয়। মূল সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধানশিক্ষক পদ সৃষ্টির পরিবর্তে একজন করে অফিস সহায়ক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক: সহকারী শিক্ষক,
ভাগ্যকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
সদর, বান্দরবান
Discussion about this post