ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন শোষণমুক্ত উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের। যে দেশের জণগণের ক্ষমতায়ন হবে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে। একটি শক্তিশালী অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে আধুনিক শিক্ষা। তিনি আধুনিক শিক্ষার একজন উৎসাহী প্রবক্তা। শুধু জ্ঞান অর্জন শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে এমন নয়, হতে হবে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাকার্যক্রম। অর্থাৎ, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা। মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক প্রযুক্তিনির্ভর দেশের ভিত্তি তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বিপ্লবে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ১৫টি সংস্থার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ‘ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)’-এর সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় স্যাটেলাইটের আর্থ স্টেশন উদ্বোধন করেন। প্রকৃতপক্ষে এটাকে আমরা ডিজিটালাইজেশনের শুরু বলতে পারি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি ‘দিন বদলের সনদ রূপকল্প ২০২১ (ভিশন ২০২১)’ উপস্থাপন করেন। যার মূল উপজীব্য ছিল একটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ এবং লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর (৫০ বছর) বছর ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। বিশ্বব্যাপী বর্তমানে যে ‘স্মার্ট রেভল্যুশন’ চলছে তার বড় অংশীদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। আমরা দেখেছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী ভাষণে (২৪ ডিসেম্বর, ২০২২) ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১ রূপকল্প’ ঘোষণা করেন ‘এক অনন্য বাংলাদেশের রূপকার’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠে আমরা পুনর্ব্যক্ত হতে দেখেছি চলতি মেয়াদের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে (৬ জানুয়ারি, ২০২৩) জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা-২০২৩’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন একটি বাস্তবতা। স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন- বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট, ভার্চুয়াল বাস্তবতা, উদ্দীপিত বাস্তবতা, রোবোটিকস, বিগ ডেটার মতো ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়। সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ রূপান্তর। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট– এ চারটি মূল ভিত্তিকে কেন্দ্র করে সরকার আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে হলে সবার আগে শিক্ষা স্মার্ট হতে হবে এবং শিক্ষাকে স্মার্ট করতে আমরা কয়েক বছর ধরে নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধুর মূল্যবোধ দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাপাঠ্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যা আজ আমাদের শিক্ষার একটি নতুন যুগে নিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের জন্য বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নতুন দক্ষতাভিত্তিক পাঠ্যক্রম গ্রহণ করেছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে এবং ২১ শতকের চ্যালেঞ্জের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনা এবং ব্যবহারিক দক্ষতাকে উৎসাহিত ও ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লব থেকে সম্পূর্ণরূপে উপকৃত হওয়ার জন্য প্রস্তুত করা।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নতুন পাঠ্যক্রম নতুন শিক্ষানীতির বৈশিষ্ট্য
১. স্মার্ট (টেকসই, আধুনিক, উচ্চাকাক্সক্ষী স্থিতিস্থাপক এবং প্রযুক্তি চালিত) বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ হলো- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট।
২. জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ১ম ও ২য়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে।
৩. ৩য়, ৪র্থ, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে শুরু হবে ২০২৪ সালে।
৪. ৫ম ও ১০ম শ্রেণিতে চালু হবে ২০২৫ সালে।
৫. একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে যথাক্রমে ২০২৬ এবং ২০২৭ সালে।
৬. দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বই পড়তে হবে।
৭. শিক্ষার্থীরা বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য) পছন্দ করতে পারবে একাদশ শ্রেণিতে।
৮. প্রাক প্রাথমিক থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না।
৯. প্রাথমিকে মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন।
১০. মাধ্যমিকে কিছু পরীক্ষা আর কিছু শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে।
১১. শিখনকালীন মূল্যায়নের ধরন হচ্ছেÑ অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপনা, যোগাযোগ ও হাতে-কলমে।
১২. জিপিএ পদ্ধতি উঠে যাবে।
১৩. প্রারম্ভিক, অন্তর্র্বতী বা মাধ্যমিক এবং পারদর্শীÑ এ তিনটি গ্রেডে ফল হবে।
১৪. শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে এসএসসি পরীক্ষা হবে।
১৫. একাদশ শ্রেণির পূর্ব পর্যন্ত অভিন্ন পাঠ্যক্রম।
১৬. প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
১৭. নবম ও দশম শ্রেণি থেকে উচ্চতর গণিত উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও রসায়নের সঙ্গে প্রযুক্তি মিলিয়ে বিজ্ঞান প্রণয়ন করা হয়েছে। শেখানো ও মূল্যায়নের ধরন বদলেছে। তবে অভিযোজনে কিছু সময় লাগবে।
১৮. প্রাক প্রাথমিক হচ্ছে ২ বছর, যা আগে ছিল ১ বছর।
১৯. একাদশ-দ্বাদশে ৭০ শতাংশ সামষ্টিক এবং ৩০ শতাংশ শিখনকালীন।
২০. ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিখনকালীন মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৫০ শতাংশ।
২১. ৪র্থ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শিখনকালীন মূল্যায়ন ৬০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ।
২২. এসএসসি পরীক্ষা আগের মতো ৯ম-১০ম শ্রেণির বইয়ের ওপর হবে না। হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্য অনুযায়ী।
২৩. শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে ৩টি স্তরে- প্রাথমিক, মাধ্যম, পারদর্শী।
২৪. নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে ২ দিন।
২৫. বই থাকছে- ১ম থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ৩টি। ৪র্থ থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয়ের ৮টি। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয়ের ১০টি।
নতুন পাঠ্যক্রমের প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য ও পর্যবেক্ষণ
বিষয়সমূহ পর্যবেক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য
১. কাজের মাধ্যমে শেখা : ব্যবহারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম করে তোলা। কাজ করে শেখা শুধু ধারণাকে উন্নত করে না, বরং সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে। ২১ শতকের দক্ষতার দ্রুত বিকশিত বিশ্বে উন্নতির জন্য দুটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। এগুলো ছাড়াও প্রশিক্ষক এবং শিক্ষক, সহায়তাকারী এবং গাইড হিসেবে কাজ করেন, যারা শিক্ষার্থীদের শেখার সহায়তা করেন।
২. সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনা এবং সৃজনশীলতা : নতুন পাঠ্যক্রমে বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে অভিযোজিত সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে বিকাশ করার জন্য শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো পরীক্ষা করতে, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে, সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে এবং সৃজনশীল সমাধান প্রদান করতে উৎসাহিত করা হবে। এই দক্ষতাগুলো ২১ শতকের দক্ষতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়।
৩. দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব : সমসাময়িক বিশ্বে প্রযুক্তির গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে পাঠ্যক্রমটি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক উন্নয়নগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ডিজিটাল সাক্ষরতার প্রচারের জন্য শিক্ষার্থীদের কোডিং, এআই, ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। উপরন্তু ভবিষ্যতে যখন মানুষ এবং মেশিন একসঙ্গে কাজ করবে তখন যোগাযোগ, সহযোগিতা, নমনীয়তা এবং মানসিক বুদ্ধিমত্তার মতো নরম দক্ষতা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে। নতুন কারিকুলামে এই সফট স্কিলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
৪. লাইফ লং লার্নিং : শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য আজীবন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। শিক্ষা এখন আর শ্রেণিকক্ষের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, আজীবন শিক্ষার অপরিহার্য উপাদান।
৫. সামগ্রিক শিক্ষা : পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপ, খেলাধুলা এবং শিল্পকলার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের বিকাশের চেষ্টা করে। এই ক্রিয়াটি স্বনিশ্চিত এবং সামাজিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ মানুষ তৈরিতে সামগ্রিক উন্নয়নের মূল্য স্বীকার করে। এখানে চারপাশ থেকে, ক্লাসরুমের বাইরের পৃথিবী থেকে শেখার মূল্য দেওয়া হবে।
৬. নির্দিষ্ট গ্রেডের জন্য কোনো পরীক্ষার নীতি নেই : প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত এবং এই পাঠ্যক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত কোন ‘পরীক্ষার নীতি নেই’। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেটের আগে যে কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। প্রকল্প, উপস্থাপনা ও ব্যবহারিক অ্যাসাইনমেন্টগুলো শিক্ষকদের দ্বারা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার জন্য ব্যবহার করা হবে, যা তাদের প্রতিভার আরও সম্পূর্ণ চিত্র প্রদান করবে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত মূল্যায়ন পরিচালনা করবে স্মার্টফোন অ্যাপ এবং এআই টুল ব্যবহার করতে পারেন।
৭. চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস, অটোমেশন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এবং অন্যান্য প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে চাকরির বাজারের প্রয়োজনীয়তা দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। সমাজকে আজীবন শিক্ষার প্রতি মনোযোগ পরিবর্তন করতে হবে। অসুবিধাগুলো মোকাবিলা করার জন্য এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে স্কুলে দক্ষতা বিকাশের ওপর উল্লেখযোগ্য জোর দিতে হবে।
৮. STEAM শিক্ষা এবং দক্ষতাভিত্তিক পাঠ্যক্রম : STEAM (Science, Technology, Engineering, Arts and Mathematics (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) শিক্ষা হলো শেখার একটি বহু বিভাগীয় পদ্ধতি, যা বিভিন্ন বিষয়কে একীভূত করে। শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনা, সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং অভিযোজন ক্ষমতাকে উৎসাহিত করে। এটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের সঠিক মানসিকতার মধ্যে রাখার জন্য একটি প্রয়োজনীয় হাতিয়ার হতে পারে। দক্ষতাভিত্তিক পাঠ্যক্রমের সাফল্য স্টিম শিক্ষার দ্বারা অর্জিত হতে পারে। কারণ, উভয়ক্ষেত্রে একই লক্ষ্য ও আদর্শ রয়েছে।
পরিশেষে বলতে পারি যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশের নতুন দক্ষতাভিত্তিক পাঠ্যক্রম দ্বারা অগ্রায়ন করা হয়েছে। নতুন পাঠ্যক্রম সরকারের মতে ২১ শতকের বৈশ্বিক অর্থনীতির চাহিদার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে সহায়তা করবে। একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করা, যা আজীবন শিক্ষাকে সমর্থন করবে। উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে। তরুণদের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত বাংলাদেশের জন্য সজ্জিত করবে। কারণ, সরকার নতুন শিক্ষাপাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলা, ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি করা এবং স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।
লেখক : অধ্যাপক, সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি); পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)
Discussion about this post