শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে ১০ দফা নিয়ে রাজপথে নেমেছেন শিক্ষকরা।
রোববার (১৬ মার্চ) চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে মানববন্ধন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেয় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখা।
এসময় নেতারা বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। তারা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই অ্যাকাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রারম্ভিক বেতনে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিতদের বদলির ব্যবস্থা না থাকা এবং দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ইএফটির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন প্রদান করা হলেও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের গাফেলতির কারণে অনেক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী গত ডিসেম্বর থেকে ৪ মাস যাবৎ বেতন ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।
শিক্ষক নেতারা আরও অভিযোগ করেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। বিগত সরকার কোনও প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবৈধভাবে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে রেখেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ আসন্ন ঈদের পূর্বেই শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান এবং ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধানসহ ১০ দফা দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ঈদুল ফিতরের পর সারাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা কঠোর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন বলে জানান শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের ১০ দফা
১. মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা।
২.ঈদুল ফিতরের পূর্বেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান।
৩.ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধান।
৪.সরকারি স্কুলের ন্যায় বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ৭ম গ্রেডসহ টাইম স্কেল প্রদান।
৫.এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন বদলি প্রথা চালু করা।
৬.সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদানসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা।
৭.শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় ৬৫ বছরে উন্নীত করা।
৮.পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন।
৯.ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় পরিচালনা করা।
১০.স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।
Discussion about this post