নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈধভাবে নিয়োগ পেয়েও এমপিওবঞ্চিত কয়েকশ শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জটিলতা নিরসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (৯ জুন) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এনটিআরসিএর সার্বিক কার্যক্রম অবহিতকরণ সভায় ভুক্তভোগী এসব প্রিয় শিক্ষক এবং প্রার্থীদের জটিলতা নিরসনে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, এনটিআরসিএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল হাওলাদার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, মহিলা কোটা পূরণের বিষয়টি আবশ্যিকভাবে অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ভুল তথ্যের কারণে মহিলা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়মিতকরণের বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে ভুল তথ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়ন করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শোকজ করা হবে।
ভৌত বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা, ইংরেজি, আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তকরণ বিষয়ে প্রবর্তিত অর্থ বছর অনুসারে এমপিওভুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে, বাংলার সহকারী শিক্ষকদের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মতামত নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালকরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আরও সিদ্ধান্ত হয়, সূচনালগ্ন থেকে সুপারিশকৃত প্রার্থীদের যোগদানে ব্যর্থতা ও অপারগতার কারণসহ সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে তথ্য প্রেরণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে প্রকৃত নিয়োগ বঞ্চিতদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রস্তুত করে প্রকৃত চিত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। আর বেসকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদ না থাকা, কাঠামো বহির্ভূত চাহিদা, ভুল তথ্য প্রেরণের কারণে সুপারিশ পেয়েও নিয়োগ বঞ্চিতদের তালিকা প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। যাদের বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করেনি তাদের এসএমএস করে তারা সুপারিশপ্রাপ্ত পদে চাকরি করতে আগ্রহী কিনা জানতে হবে এবং তারপর আগ্রহী প্রার্থীদের ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের বিপরীতে পদায়নের জন্য এনটিআরসিএ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশকৃতদের মধ্যে ৬ মাসের ডিপ্লোমায় আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে যারা এখনো এমপিওভুক্ত হতে পারেনি তাদের এমপিওভুক্ত চূড়ান্তকরণে মহাপরিচালক প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।
আর সুপারিশকৃত প্রার্থীর যোগদানে প্রতিষ্ঠানের যৌক্তিক অপারগতার ক্ষেত্রে বিকল্প প্রার্থী রাখার কোন বিধান প্রচলিত আইনে সন্নিবেশনে রাখার সুযোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ সুপারিশ পেয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে অনেক প্রার্থীই নানা জটিলতায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। জটিলতা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলেও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। প্রার্থীদের মতে শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়ায় এমপিওভুক্তি এসব শিক্ষকের জন্য এখন সোনার হরিণ। কয়েক দফা এনটিআরসিএর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেও জটিলতা নিরসন করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদারাসা শিক্ষা বিভাগ। এছাড়া শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়া সহ নানা অজুহাতে অনেক প্রার্থী যোগদান করতে দেয়নি প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব সিদ্ধান্তের এসব প্রার্থী জটিলতা নিরসন হবে।
ভুল তথ্য দেয়া শূন্যপদে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ায় এ জটিলতা সৃষ্টি। আটশ’র বেশি প্রার্থী এ জটিলতায় ভুক্তভোগী।
Discussion about this post