নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা সংকটে মধ্যে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের আবার বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে বিশেষ সহায়তা তহবিল গ্রহণসহ এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়িয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য আলাদা ক্যাডার ঘোষণারও দাবি জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘গণসাক্ষরতা অভিযান’ ও ‘দর্পণ’।
সোমবার ‘এডুকেশন সেক্টর প্লান ও এসডিজি-৪’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল পরামর্শ সভায় শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষ সরকারের প্রতি এ দাবি জানায়।
বক্তরা বলেন, শিক্ষায় শতভাগ অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করতে হলে করোনার সময়ে যারা শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সহায়তা তহবিল ছাড়াও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য পৃথক ক্যাডার ঘোষণা করতে হবে। শিক্ষকদের কেবল বেতন বাড়ানোই নয় যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী প্রণোদনা দিতে হবে বলে জানান তারা।
জাতীয় শিক্ষানীতি, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, ভিশন ২০২১ ও এসডিজি-৪ এর অভীষ্ট ও লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে একটি সমন্বিত শিক্ষা পরিকল্পনা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ঢাকাস্থ ইউনেস্কো অফিস এ পরিকল্পনা খসড়া প্রণয়ন করেছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পরামর্শসভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করা হবে। এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় আজ গণসাক্ষরতা অভিযান ও দর্পণ এর যৌথ আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগের অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে এ ভার্চুয়াল পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর। উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নিবার্হী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।
তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্জন ধরে রাখা এবং স্কুল বন্ধ থাকায় আয়মূলক কাজে যুক্ত হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। এ অবস্থায় শতভাগ ভর্তি অব্যাহত রাখা ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান বড় চ্যালেঞ্জ হবে। টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে সরকার স্কুলের পাঠদান চালু রাখলেও এই প্রক্রিয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি। বিশেষ করে গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এসব কার্যক্রমের বাইরে থেকে গেছে। এমন শিশুদের একটি বড় অংশ পরিবারকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন আয়মূলক কাজে যুক্ত হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সরকারকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা তহবিল গ্রহণ করতে হবে এবং তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
পরামর্শ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— শিক্ষা খাত পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়নকারী দলের সদস্য খন্দকার সাখাওয়াৎ আলী ও ইউনেসকোর পোগ্রাম অফিসার শিরিন আক্তার, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও পরিকল্পনা প্রণয়নকারী দলের সদস্য ড. মঞ্জুর আহমেদ, পরিকল্পনা প্রণয়নকারী দলের সদস্য ড. জিয়া-উস-সবুর, গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কে এম এনামুল হক, দর্পণের প্রকল্প পরিচালক বাসন্তি সাহা।
Discussion about this post