নিউজ ডেস্ক
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে ২০১৮ সালে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্যানেল করে নিয়োগের দাবিতে । গতকাল রবিবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে সেখানে টানা এ কর্মসূচি পালন করছেন নিয়োগ প্রত্যাশীরা।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল প্রত্যাশীদের ব্যানারে এ কর্মসূচিতে হাজারো নিয়োগপ্রত্যাশী অংশগ্রহণ করেছেন। এদিকে, আন্দোলনে অংশ নিয়ে গতকাল খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয় তাদের। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে তারা লাগাতার অবস্থান করবেন।
আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিয়োগপ্রত্যাশীরা বলেন, ২০১৮ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে প্রথম সারাদেশ থেকে প্রায় ২৪ লাখ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্য হতে ৫৫ হাজার ২৯৫ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, যা মোট প্রার্থীর মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ। যা থেকে বোঝা যায়, যারা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা সবাই মেধাবী। তাই, মুজিববর্ষে প্যানেল করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী প্রার্থীদের নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষাজীবনে সেশনজটের কথা উল্লেখ করে চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, আমাদের পড়ালেখার সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চরম সেশনজট ছিল। অন্যদিকে, সার্টিফিকেট পাওয়ার পর হাইকোর্টের রিট জটিলতার কারণে ২০১৪-২০১৮ পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের কোনো বিজ্ঞপ্তি হয়নি। এমনকি ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত কোনো প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও হয়নি। যদিও বর্তমানে চরম শিক্ষক সংকট বিদ্যমান। এদিকে করোনার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুও করা যাচ্ছে না। অথচ আগে ৬ মাস পর পর সহকারী শিক্ষক ও ২ বছর পর পর প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হতো। তাই আমরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এসময় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা শেষ হওয়ায় এটাই তাদের শেষ সুযোগ বলেও উল্লেখ করেন তারা।
তারা আরও বলেন, জাতীয় সংসদের তথ্য মতে, ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত শূন্য পদের সংখ্যা প্রায় ২৯ হাজার। নতুন বছরে অনেক শিক্ষক অবসরে গেছেন। সে হিসেবে বর্তমানে শূন্যপদের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একটি নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে প্রায় দেড় থেকে ২ বছর লেগে যায়। এছাড়াও পিটিআই, বিপিএড, মাতৃজনিত ছুটি, চিকিৎসা জনিত ছুটি ও বদলি জনিত কারণে সারা বছরেই প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ পদ শূন্যই থেকে যায়। ফলে তীব্র শিক্ষক সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
নিয়োগ প্রত্যাশীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, মুজিববর্ষে কেউ বেকার থাকবে না। এছাড়া ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেলিন তিনি। তাই আমরা আশা করি, মুজিববর্ষে এই ৩৭ হাজার চাকরি প্রার্থীকে প্যানেল করে নিয়োগ দিলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির অনেকাংশ বাস্তবায়ন হবে। কারণ, দেশের ৬১টি জেলার সব উপজেলার যোগ্য প্রার্থীরাই লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
তারা জানান, বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিনে তার আদর্শ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের জোড়ালো দাবি, তার পিতার মতো যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৩৭ হাজার মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বেকার ও তাদের পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটাবেন।
এছাড়া প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করলে নিয়োগ বাণিজ্য ও কালক্ষেপন বন্ধ হবে। শূন্যপদের ভিত্তিতে সার্কেল প্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন প্যানেল প্রত্যাশীরা।
Discussion about this post