কবিঃ সাঈফ আলম
১. একুশ মানেই একশ
একুশ মানেই তো অধিকার
মানে স্বাধিকারের গয়না জড়ায়ে নববধূ ও অপরুপ সাজ,
ভাবের দোকানে যা কিছু সদায় তার প্রকাশ্য কেনা-বেচা,
দাগড়া জোয়ানের ফোঁটাফোঁটা ঘামের কংক্রীটে গড়া
সিক্স প্যাকের ঢেল উঠা পেশির
অহংকারের ভাজের উপরে ভাজ।
একুশ মানে সব।
সব মানে সব
সব মানে কিছু নয়, সকল-
অল্প, অধিক
গল্পস্বল্পে সেলাই করা বাঙালী বীরের জাত
ভাঙন-গড়ন শেষে
ঐক্যের দাঁড় ঠেলতে রাখা
হাতের উপরে সতের কোটি মানুষের
চৌত্রিশ কোটি চঞ্চল হাত।
একুশ মানে দ্ইু এর পরে এক নয়
একুশ মানে ‘উ’-কার বাদে-
একশ।
একশ’তে ভক্তি
এই একশ’তেই মুক্তি, যুক্তি, ফল
ভাবের জগতে একুশ আরো দীর্ঘ কর বাঙালী
লাভের অংকে জের দেখে নে, তোরা
একশ’তে কত দিবি
কত নিবি বল?
২. বিস্ময় বাঙালী, বিস্ময় বাংলা
ভাষা তীর ছুড়ে যুদ্ধ হয় জানি
ভাষায় গালি ঝেড়ে ঝগড়া বাধে জানি
ভাষার সুতোয় বুনে সন্ধি হয়
সেও তো জানি,
শুধু জানতামনা
ভাষাকে বাঁচাতেও যুদ্ধ হতে পারে!
জানতামনা, সত্যিই জানতামনা
বুকের তাজা রক্তের ব্যাংক ভেঙে
খুচরো পয়সায় কিনতে হয় মাতৃভাষার সম্ভ্রম!
এ যে বিরল! এ যে বিষ্ময়!
এ বিস্ময়ে বিশেষ হয়েছ তুমি, বাঙালী
হ্যাঁ, তুমি বিস্ময় বাঙালী
বিস্ময় এক
তোমার বাংলা ভাষা!
৩. তিতিক্ষার ১৯কি.মি.
———————-
রফিক, শফিক, সালাম, বরকত
মিছিলের আগে বাড়া আটজোড়া পা
আগে বাড়ে, হাতে ধরে হাত
ইস্পাতের বেড়া দিয়ে আটকায়
রামছাগলের লম্বা গলা আর লাল ঝরা জিভ
জোয়ানের খাপ খোলা জবানে
রাজপথে খসে খসে পড়ে
অঝর কবিতার রাঙা শিরোনাম
প্রথম ও শেষ পঙতি-
“রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।”
বুনোশুয়োরদের শানিত ধনুকের বর্ষণে
টপটপ করে ঝরে যাওয়া তাজা প্রাণের রক্তে
স্তুপ হয়ে তৈরী হয় লোহিত গালিচা
সন্তানের রক্ত ঢালা গালিচা ঘেটেঘেটে
ভয়-ডরহীন ঘরে ফেরে বাংলা।
রাষ্ট্রের আগেই ভাষা পায় বাঙালী
ভাষার পরে রাষ্ট্র
ত্যাগ তিতিক্ষার ১৯কি.মি.
৫২ টু ৭১এর রাস্তা হেটেহেটে।
Discussion about this post