নিজস্ব প্রতিবেদক
এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরকে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিগগিরই একটি কমিটি এ নিয়ে কাজ শুরু করবে। শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বিবেচনায় রেখে সার্বিক পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। শিগগিরই একটি কমিটি বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে।’
গত ২৪ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। যেসব বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স রয়েছে, পর্যায়ক্রমে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। কলেজগুলোয় বিভিন্ন ধরনের শর্টকোর্স পড়ানো হবে। কলেজগুলো থেকে যারা বিএ, বিএসসি ও বি-কম পাস করবেন তাদের জন্য ওই কোর্সগুলো থাকবে।’
শিক্ষামন্ত্রীর এই নির্দেশনার পর বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তর নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় কাজ শুরু করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা বেসরকারি কলেজ থেকে অনার্স একবারেই উঠিয়ে দেবো না। অনার্স ডিগ্রিকে উপযোগী করে তোলা হবে। বেসরকারি অনেক কলেজে অনার্স স্তরের ডিগ্রির স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখা হচ্ছে না। ক্ষেত্রবিশেষে অনার্স স্তর নিয়ে আরও গবেষণা হবে। পুরো চিত্রটা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। তবে পরিবর্তন আসবে।’
এ ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষায় সংকট তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা সংকট তৈরি করছি, এমনটা নয়। গ্রামে যত্রতত্র অনার্স স্তর থাকলে স্ট্যান্ডার্ড ঠিক রাখা যাবে না। বাজারের চাহিদার ভিত্তিতে কোর্সটির উন্নয়ন করা হবে। বাজারে কিছু বিষয়ের চাহিদা রয়েছে। সব বিষয়ের নেই। সেসব বিবেচনায় রেখে কমিটি কাজ করবে।’
শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের আর্থিক অবস্থান শক্ত না করলে তারা অংশ নেবেন কেন? অভ্যন্তরীণ আলোচনা হয়েছে। বেসরকারি কলেজের অনার্স স্তর নিয়ে যে হতাশা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে, সে জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।’
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকরা সরকারি বেতন-ভাতার অংশ পেলেও অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা পান না। ২৮ বছরের বঞ্চনার শেষ সমাধান হিসেবে জনবল কাঠামোতে পদ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।
শর্টকোর্স চালুর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে শিক্ষকদের মধ্যে আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা তৈরি হলেও নতুন জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা জারির পর আবার হতাশায় পড়েন তারা। কারণ, ২০২১ সালের ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা’ প্রকাশের পর দেখা যায় কাঠামোতে অনার্স-মাস্টার্স স্তর নেই। তাই অনার্স স্তর ঢেলে সাজানোর কাজ শেষ হলে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে বলে জানান সচিব।
Discussion about this post