নিজস্ব প্রতিবেদক
রিটকারী আড়াই হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত। তবে সেই রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
এক্ষেত্রে নিজেদের পক্ষে রায় পেলে তৃতীয় ধাপে জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে চায় এনটিআরসিএ।
তবে মঙ্গলবার (২২ জুন) এই আপিলের শুনানি নিয়ে ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী আড়াই হাজার জনকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশের আদেশ স্থগিত করেননি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আগামী ২৭ জুন হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে এভাবে বার বার কাল বিলম্বে অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী সাধারণ প্রার্থীরা। তারা ক্ষোভা প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে আর কত বেকারদের সঙ্গে তামাশা চলবে? আমাদের হাহাকার কেউ বুঝল না। আমরা চাই কোনো ঝামেলা ছাড়াই এ নিয়োগ হয়ে যাক। এটা আমাদের ন্যায্য দাবি।’
এ বিষয়ে সায়েমা আক্তার নামে এক নিবন্ধনধারী বলেন, ‘এটা আমাদের সাথে অবিচার। আমরা এতগুলা টাকা দিয়ে আবেদন করেছি। এক কোটি টাকা আয় করেছে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে। এতদিন পর্যন্ত এনটিআরসিএ একটি স্ট্রং আইনজীবী দিয়ে নিজেদের মামলা পরিচালনা করতে পারলো না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক নিবন্ধনধারী বলেন, ‘আমরা চাই না রাস্তায় নামতে। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে রাস্তায় না নেমে কোনো উপায় নেই বলে মনে হচ্ছে।’
তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে যা মনে হচ্ছে তাতে নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি না দিয়ে সবাইকে মামলা করার নির্দেশনা দেয়াই উচিত ছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা আবেদন করেছি, এনটিআরসিএ মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেবে। তাই আর কোনো কালক্ষেপণ নয় দ্রুত ফলাফল চাই, দিতে হবে। উচ্চশিক্ষিত এসব মেধাবী বেকারদের মেধা ও ঘাম আর অশ্রু ভেজা আবেদনের টাকার কি কোনো মূল্য নেই এই দেশে? প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করবেন না।’
মঙ্গলবার চাকরি প্রত্যাশীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, আগামী ২৭ জুন এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পরবর্তী শুনানি হবে। আদালতে এনটিআরসিএর পক্ষে শুনানি করেন ফিদা এম কামাল। চাকরি প্রত্যাশীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
এনটিআরসিএ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় আড়াই হাজার চাকরিপ্রার্থী যারা আদালত অবমাননার মামলা করেছেন, তাদের বিষয়ে গত ৩১ মে আদেশ দেন হাইকোর্ট। রিটকারীদের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করতে এনটিআরসিএর প্রতি নির্দেশ দেন আদালত।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আমাদের পক্ষে রায় পেতে। এটি হলে সুষ্ঠুভাবে তৃতীয় ধাপের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। নতুবা ভিন্ন কোনো পদ্ধতি চিন্তা-ভাবনা করা হবে।’ আর নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ার অপেক্ষায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Discussion about this post