নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মাত্র দুটি শর্ত পূরণ করে ‘উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার’ পদে পরীক্ষা দিয়ে কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ আর থাকছে না বলে জানা গেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘সমন্বিত নিয়োগ বিধিমালা’। এতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে শুধু প্রধান শিক্ষকদের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ‘উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার’ পদে পরীক্ষা দেওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
ইতোমধ্যে নতুন বিধিমালাটি সচিব কমিটিতেও অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত অনুমোদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরাজনেরা। তবে এটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে শিক্ষকরা। কারণ যেহেতু সমন্বিত নিয়োগ বিধিমালায় সব শিক্ষকদের কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ থাকছে না।
তারা বলছেন, এতদিন ‘উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার’ পদে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হলেও প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) ইনস্ট্রাক্টর ও সহকারী ইনস্ট্রাক্টর পদে তাদের বিভাগীয় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হতো না। নতুন বিধিমালায় সব ধরনের কর্মকর্তা পদ থেকে সহকারী শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) রতন চন্দ্র পন্ডিত বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সংশোধিত নিয়োগ বিধিমালা সব ধাপে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। ক্যাবিনেট থেকে আসলে ছোটখাটো কিছু কাজ আছে সেসব শেষ করে সংশোধিত নিয়োগ বিধিমালা বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৮৫ সালের পরে এ নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করা হয়নি। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। সেসব সমাধানের মাধ্যমে এ নীতিমালা সংশোধন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অফিস সহায়ক থেকে মহাপরিচালক পর্যন্ত ৭৬টি পদে নিয়োগ-পদোন্নতি ও কর্মকর্তাদের গ্রেড সংক্রান্ত বিষয় উল্লেখ রয়েছে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘এটাতো পুরোটাই শুভঙ্করের ফাঁকির মতো। এখানে বলা হয়েছে সহকারী শিক্ষকরা আবেদন করতে পারবে না। আবার বলা হয়েছে, ৪৫ বছরের বেশি হলে প্রধান শিক্ষকরাও আবেদন করতে পারবে না। তাহলে পদোন্নতি পেয়ে একজন সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষক হতে হতে তার আবেদনের বয়স সীমা শেষ হয়ে যাবে। এখানে শুধু বিসিএস দিয়ে যারা প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন তারাই এ সুযোগ পাবেন। বাকিদের এ সুযোগ থাকবে না সিস্টেমের কারণেই। আমরা এ বিধিমালাটি মানতে পারছি না।’
উল্লেখ্য, আগের নিয়মে শর্ত দুটি ছিল-শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ও বয়স ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে । আর এভাবেই অতীতে অনেক প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকই কর্মকর্তা হওয়ারও সুযোগটি পেয়েছেন।
Discussion about this post