নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২৪ ও ২৫ তারিখ দেশের সব বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন। কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি নুর মোহাম্মদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন।
লিখিত বক্তব্যে মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজসমূহে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত সারাদেশের ৫,৫০০ জন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক দীর্ঘ ২৯ বছর থেকে সরকারি সুযোগ সুবিধার (এমপিও) বাইরে রয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকগণ ক্যাডার/নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, ডিগ্রি ৩য় শিক্ষকগণ জনবলে না থাকার পরও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, মাদ্রাসার কামিল (মাস্টার্স) শ্রেণির শিক্ষকগণও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণ এনটিআরসিএ সনদধারী এবং সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালযের বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না যা শিক্ষা সেক্টরে চরম বৈষম্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী।”
মোস্তফা কামাল আরো বলেন, “সারাদেশের অধিকাংশ কলেজে শিক্ষকগণ নামমাত্র বা বেতনহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একাধিক সুপারিশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত ৯ম ও ১০ম জাতীয় সংসদের
স্থায়ী কমিটির সুপারিশ এবং জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর অধ্যায় ০৮ কৌশলের বাস্তবায়নের জন্য এই সকল শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা অত্যন্ত যৌক্তিক। একই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুযায়ী পাঠদান করিয়ে কেউ ক্যাডার/নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, কেউ এমপিওভুক্ত হয়েছেন, আবার কেউ নন-এমপিও অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৩২০টি কলেজ জাতীয়করণ এবং ২,৭৩০টি স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্তিসহ ৮৪১ জন ডিগ্রি ৩য় শিক্ষক এমপিওভুক্ত হচ্ছেন।”
এ জন্য শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রীকে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরো বলেন, “কিন্তু পারিতাপের বিষয় এই যে, দীর্ঘ ২১ বছর থেকে আমরা এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নিবেদন ও শাস্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও জনবলের অজুহাতে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিটি আলোর মুখ দেখেনি। অথচ বছরে ১৪৪ কোটি টাকা বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ রাখলে ৫,৫০০ জন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব। এমতাবস্থায় অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণকে দ্রুত এমপিওভুক্তির দাবিতে ফেডারেশন কর্তৃক মাসব্যাপী আন্দোলনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলো। নভেম্বর ১, ১০ ও ১১ ভারিখ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহের সামনে মানববন্ধনসহ পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্য ও ইউজিসি’র চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ। নভেম্বর ১৪ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত সারাদেশের কলেজ কমিটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে এমপিওভুক্তির দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রেরণ। নভেম্বর ২৪ ও ২৫ তারিখ দেশের সব বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি এবং এমপিওভুক্তির আওতায় না আসা পর্যন্ত কলেজ থেকে শতভাগ বেতন-ভাতা প্রদানের নিমিত্তে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ অধ্যক্ষগণকে অনুরোধপত্র প্রদান। নভেম্বর ৩০ তারিখ সকাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালযের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি। এমপিওভুক্তির সমস্যা সমাধানের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
Discussion about this post