শিক্ষার আলো ডেস্ক
শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শোকজ করা হয়েছে।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ভাঙ্গা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার হোসেন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে লিখিত শোকজ করার বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।
কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা হলেন- দিবা বালক শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. ইকরাম আলী ফকির, সহকারী শিক্ষক মাহবুবুল আলম, দিলীপ কুমার বিশ্বাস, ইব্রাহীম মিয়া, মো. সারোয়ার হোসেন, শামীমা আক্তার, জাহিমা খানম, তাসদিদা খানম, প্রভাতী বালিকা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিন শেখ, মো. ওয়াসিম ফকির, মো. কবির হোসেন এবং ভোকেশনাল শাখার ট্রেড-ইনস্ট্রাক্টর মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরুন্নবী সরকার।
এ ব্যাপারে শোকজ নোটিশপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষিকা জাহিমা খানম জানান, তিনি নোটিশটি ২৩ ডিসেম্বর পেয়েছেন। তার ছেলের ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির ব্যাপারে তিনি কয়েকদিন ঢাকায় ছিলেন। তবে নোটিশের জবাব তিনি সময়মতোই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দেবেন।
শোকজ নোটিশপ্রাপ্ত দিবা বালক শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. ইকরাম আলী ফকির জানান, নোটিশ পেয়েছি, তবে জবাব এখনো দেইনি। তিনি ২২ ডিসেম্বর নোটিশ পেয়েছি এবং সময়মতো আমার বক্তব্য কর্তৃপক্ষকে জানাব।
ভাঙ্গা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার হোসেন জানান, গত ১১ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর দিতে কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অ্যাসাইনমেন্টে নম্বর প্রাপ্তিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সুধীজনদের মধ্যে চরম হতাশা, মনোকষ্ট ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের খাতা পুনরায় মূল্যায়নের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের খাতা পুনরায় মূল্যায়নের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খাতাগুলো মূল্যায়ন করা হয় এবং তাদের নম্বর বাড়ে। এতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অ্যাসাইনমেন্ট খাতা মূল্যায়নে অনিয়ম ও কম নম্বর দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণ হয়। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়।
তিনি আরো জানান, কতিপয় শিক্ষকদের অনিয়ম ও দুর্নীতির দায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করতে পারে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গত ২০ ডিসেম্বর লিখিতভাবে শোকজ করা হয়েছে। ওই দিন থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের লিখিতভাবে কারণ দর্শনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post