শিক্ষার আলো ডেস্ক
স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির আশ্বাস পূরণ না হওয়ায় আবারও রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। রবিবার (২০ মার্চ) সকালে ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র ব্যানারে দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষকরা ১১দফা দাবিতে অবস্থান নেন। তারা জানান এবার সুনির্দিষ্ট লিখিত কোনও সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ১১ দফা দাবি নিয়ে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। এরপর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে তারা সেখানে ১৪ অক্টোবর কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক আরিফুর রহমান অপু বলেন, আমরা এর আগেও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিও ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম এখনও আমাদের দাবি এটাই। এমপিওভুক্তি দেওয়া ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। এরআগে আমাদের সংসদীয় কমিটির সদস্য রাশেদ খান মেনন আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন, সেই আশ্বাস পূরণ না হওয়ায় আমরা এখানে আবারও অবস্থান নিয়েছি। এখন আমাদের মূল দাবি- প্রধানমন্ত্রী লিখিত ঘোষণা দেওয়া না পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চলমান থাকবে। এজন্য যদি আমাদের মেরে-কেটে রক্তাক্তও করে দেওয়া হয়, তবুও আমার আন্দোলনের মাঠ ত্যাগ করবো না।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন আমাদের সচিবালয়ে গিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করে আন্দোলন করার জন্য বলছে। আমরাতো ১২ বছর ধরেই তথ্য সংগ্রহ করছি। সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই যে আমরা তা নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে যাবো। তারা স্কুলগুলোকে ক, খ, গ তিনটি শ্রেণিতে বিভাজন করেছে, যার মাধ্যমে আমাদের বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তারা বলছে ক-শ্রেণিকে পরিদর্শনে পাঠাবে এবং খ ও গ শ্রেণিকে চিঠি ইস্যু করে জানাবে। তারপর তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, তবে এই সিদ্ধান্ত নিতে কতদিন সময় লাগবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা নাই। তারা বলুক যে, ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেবে।’
তাদের দাবিগুলো হলো, প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যালয় সমূহের একসঙ্গে স্বীকৃতি ও এমপিও প্রদান; বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়োগের তারিখ থেকে বেতন-ভাতা প্রদান, সকল বিদ্যালয়ের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র/ছাত্রীদের শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান, সকল বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এর শিক্ষা কারিকুলাম অনুযায়ী বিনামূল্যে পাঠ্য বই বিতরণ নিশ্চিতকরণ ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র/ছাত্রী উপযোগী স্বাস্থ্য সম্মত খাবার পরিবেশন।
এছাড়াও সকল বিদ্যালয়ে চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা উপকরণ শতভাগ নিশ্চিতকরণ, প্রতিবন্ধী বিদ্যালগুলোর নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিতকরণ, শিক্ষক/কর্মচারীদের মান উন্নয়নমূলক ট্রেনিংসহ সংশ্লিষ্ট সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, শতভাগ বিদ্যালয় আধুনিক মান সম্পন্ন প্রতিবন্ধী বান্ধব ভবন নির্মাণ নিশ্চিতকরণ, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো আধুনিক থেরাপি সরঞ্জাম সরবরাহসহ থেরাপি সেন্টার চালুকরণ এবং ছাত্র/ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানসহ আত্মনির্ভরশীল জীবনযাপনের নিশ্চয়তা প্রদানেরও দাবি জানানো হয়।
Discussion about this post