নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে যোগ্য শিক্ষক বাছাইয়ে এবার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, শিক্ষক বাছাই হবে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে। কেউ যাতে তদবির না করেন, তদবির করে চাকরি পাওয়ার আশায় কেউ যাতে ঘুষ না দেন— সে বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকসহ গোয়েন্দা সংস্থা স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে থাকবে। উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা সতর্কতাও জারি করবো।
আগামী ২২ এপ্রিল প্রথম দফায় ১১টি জেলায় সহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা ২০ মে এবং তৃতীয় বা শেষ ধাপের পরীক্ষা ২৭ মে অনুষ্ঠিত হবে।
তিন ধাপে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। সকল ধাপে নির্ধারিত দিন সকাল বেলা ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে দেশের সকল ডিআইজি, এসপিদের নিয়ে সভা করা এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া প্রশ্নপত্র প্রণয়ন স্থানে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোয় মোবাইল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম জ্যামারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ জানানো হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব রোধে গোয়েন্দা সংস্থাকে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানানো হয়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ নেই। কেউ চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষে জানানো হয়, মাঠ পর্যায়ের সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছানোসহ সকল কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স (মহিলা কেন্দ্রে মহিলা পুলিশসহ) পাঠানোর করার জন্য পুলিশ অধিদফতরকে নির্দেশনা দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পরীক্ষার জন্য ঢাকা মহানগরসহ সংশ্লিষ্ট জেলার সকল পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার আগের দিন থেকে পরের দিন পর্যন্ত তিন দিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার আশ্বাস বিদ্যুৎ বিভাগ।
প্রতিটি কেন্দ্রে মেটাল ডিটেকটর স্থাপন এবং নারী পরীক্ষার্থীদের কানে কোনও ডিভাইস আছে কিনা তা যাচাই করা হবে। এছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব প্রতিরোধে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
পরীক্ষার দিন প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ এবং প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্ট সম্বলিত ট্রাক ঢাকা থেকে গ্রহণ, জেলার ট্রেজারিতে সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র ঢাকায় পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের ব্যবস্থা নেবেন। কোনও জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে বিভাগীয় কমিশনাররা প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেবেন।
পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক শিক্ষক অধিদফতরে কন্ট্রোল রুমও চালু করা হবে।
Discussion about this post