শিক্ষার আলো ডেস্ক
প্রাথমিকের শিক্ষক বদলি কার্যক্রম বন্ধ আছে ২০২০ সাল থেকেই ।আর আগামী জানুয়ারিতে দেশব্যাপী এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বদলি কার্যক্রম চলবে অনলাইনে। আর প্রশাসনিক বদলি চলবে সারা বছর। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মহিবুর রহমান বলেন, ‘আন্তঃউপজেলা বদলি শুরু হয়েছে অনলাইন বদলি নির্দেশিকা অনুযায়ী। দেশব্যাপী বদলি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী জানুয়ারি থেকে। মার্চ পর্যন্ত তিন মাস ধরে তা চলবে। আর প্রশাসনিক বদলি যে কোনও সময় করা হবে।’
গাজীপুরের কালিয়াকৈড় উপজেলায় অনলাইনে বদলির পাইলটিংয়ের পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ১৫ দিনের জন্য বদলি আবেদন আহ্বান করা হয়। এর মধ্য দিয়ে অনলাইনে আন্তঃউপজেলা (উপজেলার মধ্যে এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে) বদলি কার্যক্রম উন্মুক্ত করা হয়। তবে বদলির জন্য ইচ্ছুক হাজারও সহকারী শিক্ষক বদলি হতে আবেদন করতে পারছেন না বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তঃউপজেলা বদলির আবেদন চাওয়া হলেও উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বদলি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। শূন্য পদে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পর জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী এই বদলি কার্যক্রম শুরু হবে।
মন্ত্রণালয় জানায়, বদলি নীতিমালা অনুযায়ী এর আগে প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বদলি শিক্ষক করা হতো। তবে এই বদলিতে তদবিরের মাধ্যমে রাজধানী ও নগর-মহানগরে বদলি হয়ে আসার সুযোগ নেন অনেকেই। ফলে মফস্বলের বিদ্যালয়গুলো শিক্ষক সংকট তৈরি হয়।
সূত্র জানায়, অনেকে তদবির করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সংযুক্তি নিয়ে চলে আসেন নগর বা মহানগরে। কেউ থাকতে চান না মফস্বলের বিদ্যালয়ে। অথচ উপজেলাভিত্তিক শূন্য পদে আবেদন করে চাকরি নিয়েছিলেন তারা। এসব বদলিতে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে বার বার। এই কারণে অনলাইনে শিক্ষক বদলি চালু করতে ২০২০ সালে বদলি কার্যক্রম বন্ধ করে মন্ত্রণালয়। অনলাইন সফটওয়ার প্রস্তুত করে বদলির ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে নানা কারণে এই বদলি কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করে মন্ত্রণালয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বদলি হতে ইচ্ছুক শিক্ষকরা বলছেন— নীতিমালার ৩.৩ ধারায় ‘অথবা’ দিয়ে দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এর যে কোনও একটি পূরণ করলেই আবেদন করতে পারার কথা। কিন্তু দুটি পূরণ না হলে আবেদন নিচ্ছে না। এটি নীতিমালার কারণে নয়। সফটওয়ার ত্রুটির কারণে।
সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘নিয়োগ সাপেক্ষে বদলি এবং অনলাইন বদলি চালু করলে শিক্ষকরা অনেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। মিউচ্যুয়াল বদলির সুযোগ দিলে এই সমস্যা থাকবে না। আর সফটওয়ারে ত্রুটি থাকলে তা দ্রুত সংশোধন করা উচিত।’
অপরদিকে বদলি নির্দেশিকায় প্রশাসনিক বদলির শর্তে বলা হয়, আচরণবিধি লঙ্ঘন বা শৃঙ্খলাজনিত কারণে প্রশাসনিক বদলি করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় উপপরিচালক প্রশাসনিক বদলির জন্য মহাপরিচালক বরাবর সুপারিশ পাঠাবেন। প্রশাসনিক কারণে বদলি হওয়ার তিন বছরের মধ্যে কোনও শিক্ষক পুনঃবদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। একই উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শ্রেণিকক্ষ বা শিক্ষক-ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে শিক্ষকদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার প্রয়োজনে মহাপরিচালক বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষক সমন্বয় বদলির আদেশ জারি করবেন।
Discussion about this post