নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির উদ্যোগে গত ৯ এপ্রিল, ২০২৩ইং রবিবার নগরীর দ্যা পেনিনসুলা চট্টগ্রাম – এ এক ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় সেক্রেটারি মোঃ আলতাফ হোসেনের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক হাবিব রহমত উল্লাহ’র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি এম, ইকবাল বাহার চৌধুরী।
প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. আ.ক.ম আব্দুল কাদের। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউছুফ, প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কর্ণেল (অবঃ) আবু নাসের মোহাম্মদ তোহা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাংগঠনিক সচিব মোহাম্মদ আবু ইউনুছ ।
প্রধান আলোচক বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ড. আ.ক.ম আব্দুল কাদের বলেন, সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে দার্শনিক সক্রেটিস থেকে শুরু করে মহানবী (দ:)পর্যন্ত সকলেই ছিলেন মূলত: শিক্ষক।এই শিক্ষাগুরুগণই পৃথিবীকে ক্রমে সভ্যতার শিখরে উপনীত করেছেন।হযরত (দ:)এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর প্রথম সবকটিই ছিলো “পড়” অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন কর।
তাই মানবজীবনে শিক্ষকের প্রভাব অপরিসীম। সিয়ামের যে মূল উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন তথা নিজকে পরিশুদ্ধকরণ, সে কাজটিই আজীবন একজন শিক্ষকের দায়িত্ব।একজন শিক্ষক তাঁর আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনোজগতে একটি মানবকল্যাণময় অনুভূতি স্থায়ী করে দেবেন, যার দ্বারা আজীবন সে মানুষের সেবায় নিজকে নিয়োজিত রাখবে ,এটাই সিয়ামের শিক্ষা।
কেন্দ্রীয় সভাপতি এম. ইকবাল বাহার চৌধুরী পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য আলোচনা করতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে বলেন,সরকার সারা দেশে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ বাস্তবায়নে সকল সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, এমপিও ভুক্ত ও পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের সকল শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনলেও বাংলাদেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষকদের বিশাল একটি অংশকে প্রশিক্ষণের বাইরে রেখেছেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ বাস্তবায়ন ও বিস্তরণে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা খুবই জরুরী, কারণ দেশের ৬০% শিক্ষক বেসরকারি খাতে পাঠদান করে যাচ্ছে।
তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে যে ফাইলগুলি নিবন্ধনের জন্য জমা আছে তা দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।তিনি ঐক্য পরিষদের সকল সদস্যকে এক থাকারও আহ্বান জানান।
বিশেষ অিতিথি উপ-পরিচালক ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন,সরকার বর্তমানে প্রাইভেট –পাবলিক পার্টনারশীপ পদ্ধতিতে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।আমি বিশ্বাস করি সরকারী বেসরকারী সকল স্কুল মিলে আমরা য়দি প্রচেষ্টা চালাই তবে সরকারের শিক্ষাক্রম রুপরেখা অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে”।বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ নিরসনে তিনি সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী দেশের শিক্ষার প্রসারে বেসরকারী কিন্ডারগার্টেনের ভূমিকাকে অনস্বীকার্য বলে উল্লেখ করেন এবং জেলা শিক্ষা অফিসের তরফ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হাবিব রহমত উল্লাহ বলেন,সারা দেশে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো প্রায় দেড় কোটি শিশুকে আধুনিক শিক্ষা প্রদান করছে।তাই সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি, দ্বিতীয় ধাপে সরকারী বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে সারাদেশের লাখ লাখ ছেলেমেয়ের শিক্ষাভার বহনকারী ব্যক্তি মালিকানাধীন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষকবৃন্দকেও যেন এই প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এ. এম ফারুক, মো. আবসার উদ্দিন, মোঃ সেলিম মাহবুব প্রমুখ। আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত করা হয়।
Discussion about this post