প্রশ্ন: পড়ার টেবিলে বসে আমি পড়াশোনা করি। আবার এভাবে পড়াশোনায় কোরআন তেলাওয়াত শুনতে থাকি। বিশেষ করে লেখালেখির সময়ে আমার বেশি শোনা হয়। কিন্তু এভাবে শোনা কতটা ঠিক হচ্ছে? ঘুমানোর আগেও মোবাইলে হেডফোন দিয়ে শোনার অভ্যাস আছে আমার। একটু বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ।
উত্তর: পড়াশোনা হোক বা অন্যান্য কাজের চলাকালীন বা মাঝপথে কোরআন তেলাওয়াত শোনা যেতে পারে। তবে এভাবে শোনা নিষেধ না হলেও উচিত নয়। কারণ, কোনো কাজে ব্যস্ত থাকাকালীন কোরআন তেলাওয়াত শুনতে গেলে তেলাওয়াতের প্রতি মনোযোগ থাকে না। অথচ কোরআন তেলাওয়াত করা হলে, তা মনোযোগ দিয়ে শোনা আবশ্যক। (ফাতওয়ায়ে শামি, খণ্ড: ০১, পৃষ্ঠা: ৫১০)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা শোনো এবং চুপ থেকো, যেন তোমাদের উপর করুণা করা হয়।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ২০৪)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি আয়াত মনোযোগ দিয়ে শুনবে, তার জন্য বহুগুণ বেশি সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করবে, কোরআন তার জন্য কেয়ামতের দিন আলো হয়ে উদ্ভাসিত হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং: ৮৪৯৪)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘যদি কেউ আল্লাহর কিতাবের একটি আয়াতও মনোযোগ দিয়ে শোনে, তাহলে তা কেয়ামতের দিন তার জন্য নুরে পরিণত হবে।’ (সুনানুদ্ দারিমি, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৫৩৬)
অনেক তাবেয়ি বুজুর্গ মনোযোগ দিয়ে শোনাকে তেলাওয়াতের চেয়েও বেশি সওয়াবের বলে মনে করতেন। প্রখ্যাত তাবেয়ি খালিদ ইবনু মাদান (মৃত্যু: ১০৩ হি) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করেন, তার জন্য রয়েছে একটি পুরস্কার। আর যিনি তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করেন, তার জন্য রয়েছে দুটি পুরস্কার।’ (সুনানুদ্ দারিমি, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৫৩৬)
Discussion about this post