মোহাম্মদ ইরফানুল ইসলাম
১১ মাস পর এলো ফিরে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে ইবাদতের মাস মাহে রমজান। অফুরন্ত রহমতের বারিধারায় সিক্ত হবে রোজাদারের রুহ। বরকতের জোয়ার লেগেছে ফুলফল ফুটতে থাকবে মনের জমিনে। নাজাতের সওগাত বিতরণ হবে সারা জাহানে। বন্দি হয়েছে শয়তান শৃঙ্খল- জিঞ্জিরে।
সাহাবি আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন রমজানের প্রথম রাত আসে তখন বিতাড়িত শয়তান ও দুষ্টু জিনদের শৃঙ্খলিত করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন- হে সৎকর্মশীল! অগ্রসর হও। হে অসৎকর্মশীল! থামো। মহান আল্লাহ রমজানের প্রতি রাতে অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪২)
পাপ ক্ষমার সর্বোত্তম মাস হলো রমজান। রমজানের দিনগুলোতে আমরা যদি একান্তই আল্লাহর জন্য রোজা রাখি এবং নিজের দোষ-ত্রুটির ক্ষমা চাই, তাহলে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন এবং অতীতের সব গুনাহও ক্ষমা করবেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআন মজিদে এরশাদ করেন, ‘আর তিনিই (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা আশ শুরা, আয়াত : ১৫)
বিশ্বব্যাপী মরণব্যাধি করোনাভাইরাস কমে যাওয়ায় এবারের মাহে রমজানের প্রেক্ষাপট পুরানো রূপে ফিরে এসেছে। গত বছর মসজিদে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজের পাশাপাশি তারাবির নামাজ জামায়াতে আদায়ের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় এবার রমজান মাসকে ঘিরে মুসলিম জাহানের হৃদয়ে শুরু হয়েছে শান্তির হাওয়া। গতবছর জামাতে খতমে তারাবিহ পড়তে পারেনি, তারাও এবার অনেক খুশি মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে বলে।
এ ছাড়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনেকেই যারা তারাবির নামাজ, কোরআন খতমের মাধ্যমে সারা জীবনের পাপ মোচনের প্রত্যাশায় দীর্ঘ ১১ মাস প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন, তারাও আজ অনেক খুশি।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-‘জান্নাতে একটা দরজা আছে যার নাম রাইয়ান। রাইহান নামক দরজা দিয়ে কেয়ামতের দিন শুধু রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। তাদের প্রবেশের পর দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তারা ছাড়া আর কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি)
রমজান মাসে লাইলাতুল কদর নামে একটি রাত আছে। যে রাতে অশুভ বা অকল্যাণকর কোনো বিষয়ের স্থান হতে পারে না। কেননা এ রাতে মানবতার কল্যাণেই আল্লাহ তাআলার সব ফয়সালা হয়ে থাকে। আর তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যদি কোনো জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ারও ফয়সালা হয় তবে তা অবশ্যই গোটা মানবতার কল্যাণের জন্যই হয়ে থাকে।
মর্যাদার এ রাতে ফেরেশতা রূহ দুনিয়ার সব মুমিন মুসলমানের ঘরে ঘরে আগমন করে প্রত্যেক নারী-পুরুষকে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাম ও শান্তির বাণী জ্ঞাপন করেন।
Discussion about this post