মুনীরুল ইসলাম
পৃথিবীতে আগমনকারী প্রায় সব নবী-রাসুলই কৃষিকাজ করেছেন। আদি পিতা হজরত আদম (আ.) পৃথিবীতে এসে প্রথম কৃষিকাজ শুরু করেন। তিনি নিজ হাতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)ও কৃষিকাজ করেছেন। তিনি নিজ হাতে খেজুরগাছ রোপণ করেছেন। সাহাবায়ে কেরামকে কৃষিকাজে উৎসাহিত করেছেন। অনেক সাহাবি খেতখামারে কাজ করে, ফলের বাগান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগে অধিকাংশ মুহাজির এবং আনসার সাহাবিই ছিলেন কৃষক।
ইসলামে কৃষকের মর্যাদা অনেক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা কৃষকের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘তাদের উদাহরণ যেমন একটি চারাগাছ, যা থেকে বের হয় কুঁড়ি। এরপর সেটা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং কাণ্ডের ওপর দৃঢ়ভাবে দাঁড়ায়। যা কৃষকদের জন্য আনন্দদায়ক।’ (সুরাহ ফাত্হ: ২৯) রাসুলুল্লাহ (সা.) কৃষিকাজে সেচব্যবস্থা ও কূপ খননকারীদের মর্যাদার কথা ঘোষণা করেন এবং এ কাজে উৎসাহিত করে বলেন, ‘রুমা কূপ খননকারীর জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়েছে।’ (বুখারি)
খুব ভোরে উঠে মাঠের কাজে মনোযোগী হয়ে যান কৃষকেরা। মহানবী (সা.) এ ব্যাপারে বলেন, ‘ফজরের নামাজের পর তোমরা জীবিকা অর্জনের কাজে অমনোযোগী হয়ে আবার ঘুমিয়ে যেয়ো না।’ (কানজুল উম্মাল)
কৃষি মানুষ ও পশুপাখির খাদ্যের জোগান দেয়। তাই এটি অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মানুষ, পাখি বা পশু যখন তাদের আহার্য গ্রহণ করে, তখন তা তার (রোপণকারী) পক্ষে একটি সদকা হিসেবে পরিগণিত হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কৃষিকাজ একটি মহৎ পেশা। কৃষকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের জন্য ফসল ফলান। কৃষিপণ্য থেকেই তৈরি হয় সব খাদ্য। তাই কৃষকদের যথাযথ মূল্যায়ন এবং এ কাজে সহযোগিতা জরুরি।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
Discussion about this post