ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
জাকাত ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়। জাকাত শব্দটি আভিধানিক দৃষ্টিতে দুটি অর্থ দেয়। এক. বৃদ্ধি পাওয়া এবং দুই. পবিত্র করা। পরিভাষায়, জীবনযাত্রা নির্বাহের পর কারও কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর অতিক্রম করলে ওই সম্পদ থেকে আড়াই শতাংশ নির্ধারিত খাতে দেওয়াকে জাকাত বলে। লক্ষণীয় যে, যদি কেউ এক লাখ টাকার জাকাত দেয়, তবে তাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হবে। সেখানে তার টাকা কমে ৯৭ হাজার ৫০০ হয়ে যায়। তাহলে জাকাত অর্থ ‘বৃদ্ধি পাওয়া’র তাৎপর্য কী?
ইসলামি অর্থনীতিবিদেরা বলেন, জাকাত দেওয়া হয় গরিবদের। তারা যখন জাকাতের অর্থ পায়, তখন তারা তাদের অধিক প্রয়োজনীয় দ্রব্য, যেমন চাল, ডাল, জামাকাপড় ইত্যাদি কেনে। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা তা থেকে কিছুটা লাভবান হন। খুচরা ব্যবসায়ী আবার পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দ্রব্য কেনেন। এভাবে ব্যবসার চক্রটি ধীরে ধীরে কারখানা পর্যন্ত এগিয়ে যায়। কারখানা থেকে খুচরা ব্যবসায়ী পর্যন্ত মধ্যস্বত্বভোগী যারাই আছে, তারা গরিবদের কেনার কারণে কিছু না কিছু লাভ করে। ফলে তাদের অর্থ বাড়ে এবং অর্থনীতির চাকা সচল হয়। তাই জাকাত অর্থ ‘বৃদ্ধি পাওয়া’ অর্থটি সার্থক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে।
অপরদিকে জাকাতদাতার টাকা কমে গেলেও তার অবশিষ্ট টাকা পবিত্র হয়। তাই এ ক্ষেত্রেও জাকাত অর্থ ‘পবিত্র হওয়া’ অর্থটি সার্থক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে। জাকাত প্রদান করা ফরজ। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের সম্পদ থেকে জাকাত গ্রহণ করুন। এর মাধ্যমে তাদের তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে।’ (সুরা তাওবা: ১০৩)
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
Discussion about this post