তানভীর তানিম
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০টি গিনেজ রেকর্ড। বাংলাদেশি হিসেবেও সর্বোচ্চ। কনক কর্মকার এমনই এক দারুণ কীর্তি গড়েছেন। ব্যালেন্সিং, ফুটবল ফ্রি স্টাইল এবং বঙ্গবন্ধু ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এই তিন ক্যাটাগরিতে রেকর্ডগুলো করেছেন কনক। তবে তার রেকর্ডের অধিকাংশই ব্যালেন্সিং ক্যাটাগরিতে। এই ক্যাটাগরিতে ১০টি রেকর্ডের পাশাপাশি ফুটবল ফ্রি স্টাইলে ৯টি এবং বঙ্গবন্ধু ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ক্যাটাগরিতে ১টি রেকর্ড করেছেন তিনি।
২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রথম গিনেজ বুকে নাম লেখান তিনি। আর সর্বশেষ নাম লেখালেন এর তিন বছর বাদে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি।
কনক জানালেন, তার রেকর্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে কপালে ১,১৫০ টি কাগজের কাপ ৬৬ সেকেন্ড রাখা, কপালের উপর ২৫ মিনিট গিটার ব্যালেন্স করা, ঘাড় দিয়ে এক মিনিটে ৩৬ বার বাস্কেটবল ক্যাচ ধরা, থুতনিতে ১৫ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড গিটার ব্যালেন্স করা, হাতের তালুর বিপরীত পাশে ১৫টি ডিম ব্যালেন্স করে রাখা, এক মিনিটে সর্বোচ্চ (১৬৩) বার হাঁটুর উপর ফুটবল ড্রপ দেওয়া, হাঁটুর উপর ৪ মিনিট ৬ সেকেন্ড ফুটবল ব্যালান্স করা, থুতনির উপর চেয়ার ৩৫ মিনিট ১০ সেকেন্ড ব্যালেন্স করা, এক মিনিটে ১৬২ বার হাঁটুতে ফুটবল বাউন্স করানো।
এছাড়া আরও রয়েছে চিবুকের উপর দীর্ঘ ৩৫ মিনিট চেয়ার ব্যালেন্স করা, মাথার উপর ১৫টি টয়লেট পেপারের রোল ব্যালেন্স করা, ৩০ সেকেন্ডে ৫০টি কয়েনের স্তূপীকৃত টাওয়ার (দুই জনের দল) তৈরি, এক মিনিটে ৭৫টি কয়েনের স্তূপীকৃত টাওয়ার (দুই জনের দল) তৈরি, এক মিনিটে ৭৬ বার ফুটবল আর্ম রোল করা, ৬৩ বার ফুটবল (সকার বল) হেড স্টল থেকে নোজ স্টলে স্থানান্তর, এক মিনিটে সবচেয়ে বেশিবার ফুটবলে (সকার) পায়ের আঙুলের টোকা দেওয়া, বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দিয়ে সবচেয়ে বড় আকারের বাক্য লেখা, একটানা সবচেয়ে বেশিবার স্পিনিং বাস্কেটবল ক্যাচ ধরা, ৩০ সেকেন্ডে সর্বাধিক আর্ম রোল (ফুটবল) করা এবং ৩০ সেকেন্ডে সবচেয়ে বেশি ফুটবল ‘হটস্টেপার’ বল নিয়ন্ত্রণের কৌশল দেখানো।
নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে ইত্তেফাককে কনক বলেন, এখন এসবে অভ্যস্ততা চলে এসেছে। বিশেষ কোনো অনুভূতি কাজ করে না। তবে প্রথমবার গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করার স্মৃতিচারণ করে বললেন, বিভিন্ন রিয়েলিটি শো-তে বিজয়ীদের কান্না করতে দেখে পাগল মনে হতো। মনে হতো, এই সুখের মুহূর্তে কেউ কান্না করবে কেন! কিন্তু প্রথমবার গিনেজ বুকে নাম লেখানোর পর নিজেই কান্না করেছিলাম।
গিনেজ জগতে কনক আইডল হিসেবে মানেন ডেভিড রাশকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিক দুই শত বারের অধিক গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেছেন।
অদূর ভবিষ্যতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গিনেজ রেকর্ড বুকে শত বার নাম লেখাতে চান কনক। পাশাপাশি মহাদেশের খ্যাতনামা সব গিনেজ রেকর্ডধারীদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চান, সেখানে স্বাক্ষর রাখতে চান নিজের সামর্থ্যের।
কনকের জন্ম ও পৈতৃক নিবাস কুমিল্লায়। তবে তিনি বড় হয়েছেন মামাবাড়ি নোয়াখালীতে। এই সূত্রে অনেকেই তাকে নোয়াখালীর ছেলে বলে জানেন। বর্তমানে লেখাপড়া করছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র তিনি।
Discussion about this post