শিক্ষার আলো ডেস্ক
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি। নতুন অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৬ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা বেশি। চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বাজেট ছিল ৮৮ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা।
শিক্ষা বাজেটের প্রস্তাব তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৪২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বে পরিণত করতে হলে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে তুলতে হবে এবং সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ৩৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ছে ৪ হাজার ৯৭ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, শিক্ষার মান নিশ্চিতকরণে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৭৯ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে এবং সহকারী শিক্ষকের ২৬ হাজার ৩৬৬টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। শিক্ষার প্রধান উপকরণ বই যাতে শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতেই পায় সে লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর প্রাথমিক স্তরের শিশুদের ১ জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ এর মাধ্যমে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বৃত্তি পাবে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থী!
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে শিশুদের ঝরে পড়া রোধ করতে শতভাগ শিক্ষার্থীকে ইএফটি’র মাধ্যমে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। সরকারের সুচিন্তিত নীতির ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় নিট ভর্তির হার ২০০৯ সালের ৯০.৮ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ৯৭.৫৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় ৪৪ হাজার ১০৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৪২ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়ছে ১ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা।
বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তির হার ৭১.৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিজ্ঞান ভিত্তিক যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। এজন্যে প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ সৃজনের লক্ষ্যে দেশের ১৬০টির অধিক বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান সরঞ্জামাদি এবং ৩০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় পরিচালিত সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির মাধ্যমে গত ৩ বছরে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৯ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত স্নাতক পর্যায়ের মোট ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬২ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, স্নাতক পর্যায়ে যে সকল শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয় তার প্রায় ৬০ শতাংশ নারী।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষায়ও টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বেড়েছে। এ খাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য ১১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়ছে ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা।
Discussion about this post