নিজস্ব প্রতিবেদক
মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে মাইকিং করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের জেঠাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈকত ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই তিনি মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৬ মে) বিকালে প্রধান শিক্ষক এমন মাইকিং করেন। রাতেই ওই নির্দেশনা বাতিলের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে ফের মাইকিং করানো হয়। করোনার এই সময়ে পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি ছাড়া এমন কাজ করায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈকত ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার জেঠাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সৈকত ইসলাম এক যুবককে দিয়ে মাইকিং করিয়ে সোমবার (১৮ মে) সকাল ১০টার সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বলে জানান। এছাড়া অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের টাকা নিয়েও বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। বিকাল পর্যন্ত এমন মাকিংয়ের পর সন্ধ্যায় বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষকের ফোন করে। তবে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশারাফী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম ও নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুর রহমানকে নিয়ে রাত ১১টায় জেঠাগ্রামে উপস্থিত হন। বিদ্যালয়ের পরিচালানা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। মাইকিংয়ের বিষয়ে আব্বাস উদ্দিন কিছু জানেন না বলে জানান। রাত ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এবং সেহরির সময় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের মাইকিংটি সঠিক নয় বলে ছয়টি মসজিদের মাইকের মাধ্যমে জানানো হয়। রবিবার সকালেও প্রধান শিক্ষকের মাইকিংটি সঠিক নয় বলে ফের মাইকিং করানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করেও প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে শনিবার মাইকিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়া এমনটি করায় প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরাখাস্ত করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইউএনও নাজমা আশরাফী বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেই রাতেই গোকর্ণ ইউনিয়নে যাই। রাত দেড়টা থেকে সেহরি পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের মাইকিংটি সঠিক নয় বলে আশপাশের একাধিক মসজিদের মাইকের মাধ্যমে জানানো হয়।’
প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা বিদ্যালয় কমিটি করেছে। এটা তাদের এখতিয়ার রয়েছে।
Discussion about this post