আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনার চিকিৎসায় সংকটাপন্ন ডাক্তার-নার্সদের ওপর ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা। করোনা মোকাবেলায় সমানে থেকে কাজ করা দেশটির হাজার হাজার চিকিৎসক ও নার্সরা এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশ নিচ্ছেন।
বুধবার ঘোষিত ‘কভিড শিল্ড’ নামের গবেষণাটির নেতৃত্ব দেবে ওয়াল্টার অ্যান্ড এলিজা হল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল রিসার্চ। আর এই গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার।
গবেষণাটির সহকারী দল নেতা রয়্যাল মেলবোর্ন হাসপাতালের প্রফেসর ইয়ান উইক জানিয়েছেন, এর আগেও করোনার চিকিৎসায় হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইনের ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই প্রথম হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।
প্রফেসর ইয়ান উইক বলেন, আমরা যতোদূর জানি, করোনা প্রতিরোধে এটিই প্রথম গবেষণা যাতে জানা যাবে এই ওষুধ কিভাবে রোগীর শরীরে আচরণ করে। আমরা আশাবাদী, এই অস্ট্রেলিয়ান গবেষণা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের একটি যথাযথ জবাব দেবে।
এই ওষুধ নিয়ে চার মাস ধরে পরীক্ষা করা হবে। দুই হাজার দু’শ ৫০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে অর্ধেককে খাওয়ানো হবে হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন। আর বাকি অর্ধেককে খাওয়ানো হবে অন্য ওষুধ (প্লাসবো ট্যাবলেট)।
গবেষণাটির আরো এক সহকারী দল নেতা প্রফেসর মার্ক পেলগ্রিনি। তিনি বলেন, এই গবেষণায় মূল নজর দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ওপর। তারা রোগীদের পাশে থেকে কাজ করেন। করোনার সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে তারাই রয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য মানুষকে নিরাপদ রাখা ও ভালো রাখা। সেই সঙ্গে তারা যাতে করোনার এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালিয়ে যেতে পারেন তাতে সহযোগিতা করা।
যাইহোক, গত ৫০ বছর ধরে এই ওষুধটি ম্যালেরিয়া, লুপাস ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের চিকিত্সার জন্য চিকিত্সকরা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। এর অর্থ করোনার চিকিৎসায় এই ওষুধটির সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। কিন্তু ক্লিনিক্যাল ট্রায়েলের মাধ্যমে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো সমাধান করা যাবে।
প্রফেসর ইয়ান উইক বলেন, যে কোনো ওষুধের মতো হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইনেরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তবে ভাগ্যক্রমে এগুলো সুপরিচিত ও সচরাচর ঘটে না এমন। যারা এই ওষুধটি নিয়ে গবেষণা করছেন তারা হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে অত্যন্ত অভিজ্ঞ।
তিনি আরো বলেন, কঠিন নির্বাচন মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে সকল অংশগ্রহণকারীদের স্ক্রিনিং করা হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো সময়জুড়ে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে সকল অংশগ্রহণকারীদের।
সূত্র: সিনহুয়া।
Discussion about this post