ক্রীড়া ডেস্ক
বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেই জয়ের অনুভূতি কোচ গর্ডন গ্রিনিজকে দিয়ে বুঝিয়েছিল ক্রিকইনফো, ‘গর্ডন গ্রিনিজ কাঁদছেন।ভেবে দেখুন, গ্রিনিজের মতো মানুষ কাঁদছেন; যাঁর দেশ আলাদা, সংস্কৃতিও আলাদা। সর্বকালের অন্যতম সেরা স্কয়ার-কাট তাঁর, ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন এক পায়ে, দেখলেই ‘আহত ব্যাটসম্যান থেকে সাবধান’ কথাটা মাথায় আসে সবার; সেই গ্রিনিজ এ জয়ের পর কেঁদেছেন। জয়টা দলের কাছে এমনই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
কোন জয় নিয়ে এই স্মৃতি উসকে দেওয়া তা না বললেও চলে। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেই ম্যাচটা! আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় অলিখিত ‘কোয়ার্টার ফাইনাল’। সে ম্যাচে আকরাম খানে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংসটি ঘুরিয়ে দিয়েছিল দেশের ক্রিকেটের মোড়। কাল তামিম ইকবালের ফেসবুক লাইভে উঠে এসেছিল সে ম্যাচের প্রসঙ্গ।
আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন ও খালেদ মাসুদ। দেশের সাবেক এই তিন অধিনায়ককে কাল ফেসবুক লাইভে নিয়ে এসেছিলেন তামিম। দেশের ক্রিকেটে শুরুর নায়কদের পেয়ে তামিম নিজেই তুলেছিলেন আইসিসি ট্রফির প্রসঙ্গ।
লাইভ অনুষ্ঠানের শুরুতেই দেশের ক্রিকেটে আকরাম-মিনহাজুল-পাইলটদের অবদান মনে করিয়ে দেন তামিম, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটে উনাদের অবদান অনেক বড়। উনাদের অবদান কখনো ভোলা সম্ভব না। বিশেষ করে আইসিসি ট্রফিতে। এ নিয়ে প্রশংসা করা ছাড়া আর কিছু নেই।’ তামিমের মতে, ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন।
জাতীয় দলের এ ওপেনার আকরামকে সে ম্যাচের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এখন বিসিবির সঙ্গে থাকা আকরাম বলেন, ‘আমরা জানতাম কোনো খেলায় বাংলাদেশের যদি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ থাকে সেটি ক্রিকেট। আমরা ফিল্ডিং ও বোলিং ভালো করলাম (সেই ম্যাচে)। হঠাৎ দেখি ১৫ রানে ৪ উইকেট নেই। বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন এক পর্যায়ে বলা হলো, খেলা ২০ ওভারের আগে বন্ধ হয়ে গেলে আমরা সেমিতে উঠব। এরপর আমরা দেরি করতে শুরু করলাম। এরপর খেলাটা বন্ধ হলো। আমরা তো খুশি।’
আকরাম এর পরের ঘটনাগুলো বলেন, ‘ কিন্তু এরপর হঠাৎ শুনলাম, ম্যাচ হতে হবে। ম্যাচ যদি না হয় বাংলাদেশ কোয়ালিফাই করবে না। আমরা তো আবার চাপে। একটা পর্যায়ে নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয়। নান্নু ভাইয়ের সঙ্গে নতুন জুটি হলো। সাইফুল আসল, একটা সময় আমরা জিতে যাই। ওই টুর্নামেন্টে আমরা একটা পরিবারের মতো ছিলাম।’
সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডকে ৭২ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পায় বাংলাদেশ। সে ম্যাচে ৭০ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন সাবেক উইকেটরক্ষক খালেদ মাসুদ। আড্ডায় এই ইনিংসের প্রসঙ্গও তোলেন তামিম। তখন বাংলাদেশের কোচ গর্ডন গ্রিনিজের প্রশংসাও করেন খালেদ মাসুদ।
খালেদ মাসুদ বলেন, ‘ভালো খেলোয়াড় হতে হলে কী ধরণের অনুশীলন করা দরকার, সেটা গর্ডন গ্রিনিজ আমাদের শিখিয়ে গেছেন। একদম আর্মিদের মতো অনুশীলন। ভোরবেলায় ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ফিটনেস অনুশীলন। এমন এমন কিছু অনুশীলন করাত সবার ব্যথা। পুরো দিনটা সে ব্যবহার করত। আমরা প্রায় জেলখানার মতো ছিলাম। ঢাকায় আসতে পারতাম না।’
Discussion about this post